বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি:
বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার মঘিয়া ইউনিয়নের প্রায় চার শতাধিক বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী সার্বজনীন শিব মন্দিরের দরজার তালা ভেঙ্গে শিবলিঙ্গ বেদি হতে উপড়ে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা।
তবে মঘিয়া সার্বজনীন শিব মন্দির কমিটির সভাপতি সুব্রত রায় চৌধুরী ০৯ এপ্রিল (শনিবার) জানান, চোরের দল হয়তো কোন দামী জিনিসের খোঁজে দরজার তালা ভেঙ্গে মন্দিরে ঢোকে এবং কষ্টি পাথর ভেবে শিবলিঙ্গটি বেদি হতে তোলার চেষ্টা করেছে। কে বা কারা কখন এটা করেছে তা জানা যায়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে থানা পুলিশ।
বাগেরহাটের মঘিয়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কিছু দুরে কচুয়া-গজালিয়া সড়কের পাশে এই মন্দিরের অবস্থান হওয়ায় সহজেই সবার দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়। প্রাচীন এই মন্দিরটি একজন বাংলাদেশী পর্যটক (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) দেখতে যায় এবং মন্দিরের দরজার তালা ভাঙ্গা ও বেদি হতে শিবলিঙ্গ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। বিষয়টি তিনি মিডিয়াকর্মীদের জানান। শনিবার মিডিয়াকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই পর্যটকের বয়ানের সত্যতা পায়।
সরেজমিনকালে মঘিয়া সার্বজনীন শিব মন্দির কমিটির সভাপতি সুব্রত রায় চৌধুরী আরো জানান, জমিদারী আমলের প্রাচীন স্থাপত্য নিদর্শন হিসেবে এই মন্দির এলাকা প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের দায়িত্বে সংরক্ষণের জন্য কচুয়া সহ গোটা অঞ্চলবাসীর দীর্ঘদিনের দাবী রয়েছে। যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে না পারায় প্রায়ই মন্দির এলাকার প্রাচীন নানা জিনিস চুরি হতে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমান ঘটনাটি ঘটেছে। তিনি বলেন, মন্দিরের পুরোহিত কার্তিক মুখার্জী পুজো দিতে গিয়ে প্রথম মন্দিরের তালা ভাঙ্গা এবং শিবলিঙ্গ বেদি হতে পড়ে থাকতে দেখেন। বিষয়টি তিনি স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েছেন বলে জানান।
শনিবার মঘিয়া ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট পংকজ কান্তি অধিকারী জানান, তিনি গতকাল রাতে ঘটনাটি শুনেছেন। খোঁজ নিয়ে দেখেছেন মন্দিরের তালা ভাঙ্গা এবং মন্দিরের অভ্যন্তরে শিবলিঙ্গ শাবল জাতীয় কিছু দিয়ে বেদি হতে উপড়ে ফেলা হয়েছে। তবে কে বা কারা এটা করেছে তা জানা যায়নি।
কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জীনাত মহল শনিবার জানান, তিনি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম জানান, মন্দির কমিটির পক্ষ হতে এখনো কেউ তাকে এই বিষয়টি জানায়নি। তবে তিনি বিষয়টি গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।
বিষয় টি নিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বী সহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের মাঝে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।