মোঃ কামাল হোসেন খাঁন মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
মেহেরপুর থেকে মাইক্রোবাসযোগে রাজশাহী যাওয়ার পথে নাটোরের বরাইগ্রামে ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে ২ জন নিহত এবং ৩ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার (১৮ মে), ভোর ৪ টার দিকে নাটোরের বরাইগ্রাম উপজেলার নগর ইউনিয়নের কয়েন এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনায় মাইক্রোবাস চালক চুয়াডাঙ্গার তালতলা পশুরহাট এলাকার আছের উদ্দিনের ছেলে মনিরুজ্জামান (৪৫) ও মেহেরপুর সদর উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের গহরপুর গ্রামের মৃত আদম আলী মাস্টারের ছেলে আল মাহবুব (৩৮) নিহত হয়েছেন। ঘটনায় আহত হয়েছেন নিহত মাহবুবের আরও ৩ বন্ধু। তবে আহতদের বাড়ি চুয়াডাঙ্গা হওয়ায় তাদের পরিচয় জানা যায়নি।
নিহত মাহবুবের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত ৮ টার দিকে ভারতে চিকিৎসা সেবা নেওয়ার জন্য রাজশাহীতে ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর উদ্দেশ্যে বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে গহরপুর থেকে মাইক্রোবাসযোগে যাচ্ছিলেন ক্যান্সারে আক্রান্ত মাহবুব।
কুষ্টিয়া ছাড়িয়ে নাটোরের বরাইগ্রাম উপজেলার কয়েন এলাকায় পৌঁছলে পঞ্চগড় থেকে পাবনাগামী একটি বালি বোঝায় ট্রাক দ্রুত গতিতে এসে সজোরে ধাক্কা দেয় মাইক্রোবাসটিকে। এতে ড্রাইভার ও মাহবুব নিহত হন।
মাইক্রোবাসে মাহবুবের সঙ্গে থাকা তার বন্ধু কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, বরাইগ্রামের কয়েন এলাকায় পৌঁছলে একটি বেপরোয়া ঘাতক ট্রাক আমাদের মাইক্রোবাসকে ধাক্কা দেয়। এতে মাইক্রোবাসটি দুমড়ে মুচড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই ড্রাইভার মনিরুজ্জামান নিহত হন।
আমরা কয়েকজন মিলে বন্ধু মাহবুব কে টেন বের করার আধাঘন্টা পর মাহবুব মারা যায়। এর পূর্বে মাহবুব আমাদের সাথে কথা বলে এবং সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনাকে মাফ করে দেওয়ার জন্য।
বেলা ৩ টার দিকে নিহত মাহবুবের লাশ তার নিজ বাসভবন মেহেরপুর সদর উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের গহরপুর এসে পৌঁছায়। এসময় গহরপুরসহ আশেপাশের লোকজন ও স্বজনদের আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভারী হয়ে ওঠে।
উল্লেখ্য, প্রায় ২০ বছর পূর্বে মাহবুবের বড় ভাই ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। গতবছর তার ছোট ভাই ও ভাইয়ের বউ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন।
অবশেষে মাহবুবের মৃত্যু যেন মেনে নিতে পারছেন না এলাকাবাসী।
মৃত্যুকালে মাহবুব মা, স্ত্রী ও দু’টি সন্তান রেখে যান। বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে গহরপুর গোরস্থানে মাহবুব কে দাফন করা হয়।