মিথ্যা বলার প্রতিযোগিতার চ্যম্পিয়ন বিএনপি
৫ জুন (২০২২) ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবে সংবাদকর্মীদের আলোচনাকালে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফকরুল ইসলাম বলেন ‘বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। যমুনা সেতুর কাজও করেছে বিএনপি সরকার।’
যে দলের শীর্ষস্থানীয় পর্যায় থেকে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে মিথ্যাচার চলছে বছরের পর বছর, তারা নানা বিষয়ে এমনটি করবে তাতে বিস্ময় কী! বাংলাদেশের জনগণ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে রায়ের মাধ্যমে স্বাধীনতা ঘোষণার ম্যান্ডেট দিয়েছিল, তিনি তার মর্যাদা রেখেছেন। উপযুক্ত মুহূর্তের অপেক্ষা করে তিনি ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং জনগণ তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নিয়ে যুদ্ধে বিজয়ী হয়। বিএনপি কেন এমন মিথ্যাচার করছে? প্রকৃতপক্ষে তারা বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং এ সংগ্রামের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হেয় করতে চায়, জনমনে বিভান্তি সৃষ্টি করতে চায়।
একইভাবে তারা এখন চাইছে আমাদের শ্রেষ্ঠ অর্জনগুলোর একটিÑ নিজস্ব অর্থে পদ্মা নির্মাণ নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে। বিশ্বব্যাংক যখন সেতু নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে অন্যায় আচরণ করেছে, তখন বিএনপি এবং তার মিত্ররা সেটা সমর্থন করেছে। সেতু উদ্বোধনের প্রাক্কালে কখনও খালেদা জিয়াকে ‘ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকারী’ ঘোষণা করছে, কখনও ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। সবই করা হচ্ছে বিশেষ মতলব থেকে।
বিএনপির ঘনিষ্ঠ মিত্র নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের দুই বারের নির্বাচিত ভিপি (চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদেও নির্বাচিত জিএস ছিলেন তিনি)। তিনি বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের পাশে ভারতের আসাম ও অরুণাচল রাজ্য। সেখানে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। সেতুটির নাম দেওয়া হয়েছে ভুপেন হাজারিকা সেতু। লম্বা ৯ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। পদ্মা সেতু লিম্বা ৬.১৫ কিলোমিটার। ভারত ওই সেতু নির্মাণ করেছে ১ হাজার ১২৮ কোটি টাকায়। পদ্মা সেতু নির্মাণে ব্যয় শুরু ধরা হয়েছিল ১০ হাজার কোটি টাকার মতো। পদ্মা সেতু নির্মাণে সর্বশেষ বলা হয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে। তার সাথে আরও ১০-২০ হাজার কোটি টাকা যুক্ত হয়েছে। কমপ্লিট করতে আরও ২০ হাজার কোটি টাকা লাগবে। তার মানে ৬০-৭০ কোটি টাকা লাগবে পদ্মা সেতু নির্মাণে।’
আন্তর্জাতিক মিথ্যা বলার প্রতিযোগিতায় এ ধরনের প্রতিযোগী থাকলে কেউ বিএনপি নেতৃবৃন্দ ও তাদের দুষ্কর্মের সহযোগীদের সঙ্গে পারবে না, সেটা নিশ্চিত করেই বলা যায়।