উজ্জ্বল কুমার দাস,বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধিঃআসন্ন ঈদুল আযহা কে সামনে রেখে কোরবানির পশু নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারীরা।দফায় দফায় গো-খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধির পরেও থেমে নেই খামারিদের গরু পালনের কাজ। এরই মধ্যে উপজেলার বিভিন্ন পশু-হাটে শুরু হয়েছে কোরবানির পশু বিক্রির ধুম।
এমনি একজন গো-পালক বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের দরিচর মালিপাটান গ্রামের খামারি বিশ্বনাথ বৈরাগী।নিজের খামারের উৎপাদিত ব্রাহামা জাতের বাছুর ৩ বছর ধরে পালন করছেন তিনি। পরম আদরে লালন-পালন করায় খামারির মেয়ে শিউলি বৈরাগী ভালোবেসে ষাড়টির নাম দিয়েছেন টিয়া। প্রায় ৩০ মন ওজনের ১০ ফুট লম্বা ও ৭ ফুট চওড়া কালো ও বাদামী রংয়ের বিশাল আকৃতির ষাড়টির মূল্য হাকানো হয়েছে ১০ লক্ষ টাকা।জানাযায় সকালে টিয়ার খাবার দিয়ে বিশ্বনাথ চলে যায় ঘাষ কাটতে।এর পর সারাদিনই মেয়ে শিউলি ও স্ত্রী সবিতাই এই গরুর দেখভাল করে।
৪ জুলাই(সোমবার) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়,প্রায় ৩০ মন ওজনের বিশাল এ ষাড়টি দেখতে প্রতিদিনই আশপাশের এলাকা থেকে লোকজন ভিড় জমাচ্ছেন বিশ্ব নাথ বৈরাগীর বাড়িতে।টিয়া ছাড়াও বিশ্বনাথের খামারে রয়েছে আরো ১ টি এড়ে বাছুর ও ২টি বড় গরু সেগুলোকে কেন্দ্র করেই স্বপ্নের বীজ বপন করছেন তিনি।তার এ কাজে সার্বক্ষণিক সহায়তা করেন তার স্নাতক পড়ুয়া মেয়ে শিউলি।বলা যায় শিউলি এই গরুর মালিক।
তার মেয়ে শিউলি বৈরাগী বলেন, ৮-৯ বছর ধরে আমরা গরু পালন করি।এবারই আমাদের সব থেকে বড় গরু হয়েছে।বাবা অসুস্থ তাই বাইরে কাজ করতে পারে না।অনেক কষ্ট করে আমাদের সংসার চলে।ঠাকুরের কৃপায় এবার গরু বিক্রি করে আমাদের সংসারে সচ্ছলতা আসবে।আমি ভালভাবে পড়াশুনা করতে পারবো।
বিশ্বনাথ বৈরাগী বলেন, তিন বছর ধরে শুধু কাঁচাঘাষ,খড়কুটা,ধান ও ভূষি সহ প্রাকৃতিক খাবার দিয়ে মোটাতাজা করা হয়েছে টিয়াকে। যার মধ্যে লুকিয়ে আছে আমার পরিবারের সবার আদর ও ভালোবাসা।এবারের কুরবানীতে গরুটাকে ১০ লক্ষ টাকায় বিক্রি করতে পারলে ঘড়টাকে সংস্কার করতে পারবো।মেয়ের অক্লান্ত কষ্ট সফল হবে।তিনি আরো বলেন যদি কোন ক্রেতা গরুটি কিনতে আগ্রহী হয় তবে ০১৭৬৪৮৫৩৬৫০ নাম্বারে যোগাযোগ করতে পারেন।
প্রতিবেশী মোঃ আইয়ুব আলী খান বলেন, বিশ্বনাথের গরু দেখতে প্রতিদিন অনেক লোক আসে।সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এই গরুর যত্ন করে বিশ্বনাথের পরিবার সে ভালো দামে গরুটি বিক্রি করুক এটাই আমাদের আশা।টিয়া এবার কুরবানির বাজার কাঁপাবে বলে ধারনা।
মালতী বাওয়ালী নামের এক নারী বলেন,সারাদিন বিশ্বনাথ ও সবিতার পাশাপাশি তাদের মেয়ে শিউলি বৈরাগী গরুর জন্য প্রচন্ড কষ্ট করে।লেখাপড়ার পাশাপাশি শিউলির সব চিন্তা ভাবনা এই গরুকে নিয়ে। নিজরা খেতে না পেলেও কখনো গরুকে না খাইয়ে রাখে না তারা।গরুটি ভালো দামে বিক্রি করতে পারলে হয়তো তাদের পরিবারে সচ্ছলতা আসবে।
বাগেরহাট জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোঃ লুৎফর রহমান বলেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষে বাগেরহাটে খামারী ও পারিবারিক পর্যায়ে অনেকেই গরু মোটাতাজা করেন বিক্রির জন্য।কচুয়ার বিশ্বজিত বৈরাগী নামের এক ব্যক্তির অনেক বড় ১ টি গরু হয়েছে। গরুটিকে কোন ধরনের হরমন ব্যবহার করা হয়নি।গরুুুটির ওজন ২৫ মনের বেশি।আশাকরি সে ভাল দামে বিক্রি করতে পারবেন।
সর্ম্পকিত খবর সমূহ.
November 21, 2024