মোঃ রায়হান জোমাদ্দার,স্টাফ রিপোর্টার,ঝালকাঠিঃ
‘লাগামহীন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি,জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি ও অস্বাভাবিক মূল্যস্ফীতির কারণে দেশের মানুষ আজ দিশাহারা। মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। গোটা দেশে গণরোষ ছড়িয়ে পড়ছে। সরকার এই গণরোষ ঠেকাতে পুলিশকে ব্যবহার করছে।
আজ শুক্রবার(১২ আগস্ট) বেলা ১১টায় বরিশাল মহানগরের সদর রোডে জেলা ও মহানগর বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। জ্বালানি তেল, গণপরিবহনের ভাড়া, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিসহ অসহনীয় লোডশেডিং এবং ভোলায় গুলিতে ছাত্রদল নেতা নূরে আলম ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আবদুর রহমান হত্যার প্রতিবাদে এই সমাবেশ করে দক্ষিণ ও উত্তর জেলা বিএনপি।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশে গুলি চালিয়ে ভোলা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নূরে আলম ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আবদুর রহমানকে নির্মম ভাবে হত্যা করেছে পুলিশ। দেশের মানুষের দাবি আদায়ে বিএনপির এই দুই নেতার আত্মত্যাগ বৃথা যেতে পারে না। তাঁদের রক্তের বিনিময়ে এই জুলুমবাজ, লুটেরা ও ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন হবে।
বক্তারা আরও বলেন, মধ্যরাতে হঠাৎ জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে এই অবৈধ সরকার আবারও প্রমাণ করেছে, তারা জুলুমবাজ ও গণবিরোধী। শুধু জনগণের টাকা লুট করতেই জ্বালানির দাম বাড়ানো হয়েছে। বিশ্ব বাজারে জ্বালানির দাম কমার পরও তেলের মূল্যবৃদ্ধি মানুষের রক্ত চুষে নেওয়া ছাড়া আর কিছুই নয়।
জ্বালানি তেলের পাশাপাশি গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে দাবি করে বক্তারা বলেন, এই সরকারের সময় ফুরিয়ে এসেছে। তাদের পতন আসন্ন বুঝতে পেরে গণবিরোধী সরকার জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। শুধু জ্বালানি তেলের দাম নয়, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে।
সরকারের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন, ডিজেলের দাম লিটার প্রতি ৩৪ টাকা বাড়ানো হয়েছে। ডিজেলের ওপর সব উৎপাদন ও যোগযোগ নির্ভরশীল। সব মানুষের উপর এর প্রভাব পড়বে। এমনিতেই নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, সীমাহীন মুদ্রাস্ফীতির কারণে মানুষের জীবন বিপন্ন। তার উপর আরেক দফা জ্বালানি তেলের দাম বাড়ালে মানুষের না খেয়ে মরা ছাড়া কোনো গতি থাকবে না। কিন্তু তাতে লুটেরা, ফ্যাসিস্ট সরকারের কোনো কিছু যায় আসে না।
সমাবেশ শুরুর আগে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেন। এ সময় নগরের বিভিন্ন পয়েন্টে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল।
বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা দেওয়ান মো. শহিদুল্লাহর সভাপতিত্বে ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আকতার হোসেন ও উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মিজানুর রহমানের যৌথ সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মেজবা উদ্দিন, বরিশাল দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মজিবুর রহমান, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য নুরুল আমিন, মুলাদী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুস ছত্তার খান, হিজলা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল গফফার খান, সদর উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক তছলিম উদ্দিন প্রমুখ।
সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে মরিয়া অভিযোগ করে বক্তারা বলেন, অবৈধ সরকারের উন্নয়নের ফাঁকা বুলি সব ফাঁস হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ খাতে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে সরকার বিদ্যুতের স্বয়ম্ভরতার গল্প শুনিয়েছিল। এখন বিদ্যুৎ না দিতে পারায় সেই ফাঁকা বুলি মানুষ জেনে গেছে। তাই সরকার এখন ভয় দেখিয়ে গদি রক্ষা করতে চায়।