কমলনগর,লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃএ বছর বর্ষাকালে বৃষ্টি হয় নাই বললে চলে। স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত না হওয়াতে জমিতে সেচের প্রয়োজন হয় । তাই সেচের মাধ্যমে আমন ধান রোপণের জন্য জমি প্রস্তুত,ও বিজতলায় পানি দিতে হচ্চে কৃষককে। ডিজেল ও ইউরিয়া সারের দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে ফসল উৎপাদনের ওপর। একদিকে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় ট্রাক্টর দিয়ে কৃষকের জমি চাষে খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে।
অন্যদিকে ইউরিয়া সারের দাম বাড়ায় সার কেনার খরচ বেড়েছ কৃষকের। এ অবস্থায় জমি চাষ করে ফসল উৎপাদনে হিমশিম খাচ্ছেন উপকুলের কৃষক। কৃষি অফিসও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে কৃষকেরা ক্ষতির বিষয়টি স্বীকার করছে।
এমনিতে এ বছর স্বাভাবিক বর্ষার সময়ের মতো বৃষ্টি হয়নি। এ অবস্থায় যদি অতিরিক্ত দামে ডিজেল কিনে, একদিকে বৃষ্টি নাই অন্যদিকে গৃষ্মকালের মত মাঠ-ঘাট কিছু কিছু জায়গায় চৌচির হয়ে আছে , সব মিলিয়ে আবার সারের দাম বৃদ্ধি কৃষকরা হতাশ কারণ উৎপাদন খরচ ও পরিবহন খরচ দুটোই বাড়বে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে ডিজেলের মোট চাহিদার বড় একটি অংশ ফসল উৎপাদন ও পণ্য পরিবহনে ব্যবহার করা হয়। তেলের দাম লিটারে ৩৪ টাকা এবং ইউরিয়া সারের দাম কেজিতে ৬ টাকা বাড়ানোর কারণে ফসল উৎপাদনে ব্যয় বাড়বে প্রায় ৩০ শতাংশ; ক্ষতিগ্রস্ত হবে কৃষি অর্থনীতি।
জানা গেছে, কৃষক পর্যায়ে ইউরিয়া সারের সর্বোচ্চ খুচরা প্রতি কেজি ১৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২২ টাকা পুনর্নির্ধারণ করেছে সরকার। এরপর গত শুক্রবার রাতে হঠাৎ জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ১১৪ টাকা করা হয়েছে।
এর মধ্যে ইউরিয়া সার প্রতি কেজি ২২টাকা, পটাশ প্রতি ১৫কেজি , ফসফেট প্রতি কেজি ২২ , জিপসাম প্রতি কেজি ১০টাকা।
পাওয়ারটিলার মালিক ও চালক মোঃ আবুল কাশেম জানান, ডিজিলের দাম বৃদ্ধির কারনে সেচ খরচ বেড়ে গেছে। আগে প্রতি বিঘা ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় চাষ করতাম ডিজেলের দাম বাড়ার পরদিন থেকেই এক বিঘা জমি চাষ ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা চাচ্ছি। গাড়ি চালিয়ে যদি লাভই না হয়, তাহলে চলব কীভাবে? আগে তেলের দাম কম ছিল, চাষের খরচও কম নিতাম সরকার তেলের দাম বাডিয়ে দিয়েছে আমাদের কি করার আছে?
নাহলে আমরা লোকসানে পড়তে হবে।
কৃষক নজির আহমেদ জানাব, তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় ট্রাক্টর চালকরা আগের দামে এখন আর হালচাষ করতে আসে না আমি খুব দুর-চিন্তায় আছি।
প্রজেক্ট ম্যানাজার আবদুল গনি বলেন,সার ও তেলের দাম বাড়ার কারণে উৎপাদন ব্যয় প্রায় ৩০ শতাংশ বেড়ে যাবে। কারণ যান্ত্রিক কৃষিব্যবস্থায় উৎপাদন খরচ অনেকটাই নির্ভর করে ডিজেলের ওপর। এ অবস্থায় কৃষকের জীবনে অর্থনৈতিক যে সংকট, তা আরও প্রকট হবে।
উপজেলা কৃষি সূত্রে জানা যায়, এ বছর ১৯ হাজার ৫ শত হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা আতিক আহমেদ বলেন, আগস্ট মাস পুরোটাই আমন লাগানোর সময় আশাকরি এই সময়ে বৃষ্টিহবে।তিনি আরও বলেন ডিএপি সারে ২০ ভাগ ইউরিয়া থাকে, ডিএপি সার প্রতিকেজি ১৬ টাকা ইউরিয়া সারের দাম বৃদ্ধির কারণে ডিএপি সার ব্যবহার করলে কৃষকের অর্থনৈতিক সমস্যাটা কিছুটা লাঘব হবে। বৃষ্টি কম হওয়ায় এবং তেলের দাম বৃদ্ধির কারনে ফসল উৎপাদনে এবার ব্যয় কিছুটা বাড়বে।