মোঃ খলিলুর রহমান,সাতক্ষীরাঃসুপেয় খাবার পানির দাবীতে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৩ আগস্ট ২০২২) সকাল ১০ টায় বিশ্ব যুব দিবস পালনের অংশ হিসেবে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
লিডার্স-স্বদেশ পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক প্লান ও এ্যাকশন এইড এর সহযোগিতায় সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটি, জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরাম, শ্যামনগর কালিগঞ্জ ও আশাশুনি উপজেলা যুব ফোরাম, মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন সংগঠন এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে।
উক্ত মানববন্ধন সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সাতক্ষীরা জেলা জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের সভাপতি ও শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ আব্দুল হামিদ। আরও উপস্থিত থেকে বক্তব্য তুলে করেন সাতক্ষীরা নাগরিক কমিটির আহবায়ক ও ফেরামের সদস্য আবুল কালাম আজাদ, এমএসএফ এর সদস্য সচিব এড. মুনির উদ্দীন, সিডোর নির্বাহী পরিচালক শ্যামল বিশ্বাস, চুপড়িয়া মহিলা সংস্থার সভানেত্রী মরিয়ম মান্নান, সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের পরিচালক আফজাল হোসেন, ভূমিহীন সমিতির নেতা আব্দুস সামাদ, প্রতিবন্ধী কল্যাণ সমিতির পরিচালক আবুল কালাম, যুব ফোরামের মোঃ মাসুদ রানা, উত্তরণের প্রকল্প সমন্বয়কারী নাজমিন নাহার, স্বদেশের গোবিন্দ মুন্ডা, কালিগঞ্জ উপজেলা যুব ফোরামের সভাপতি হারুন অর রশিদ, সদস্য শাহানাজ পারভীন, শ্যামনগর উপজেলা যুব ফোরামের সভাপতি মোঃ মমিনুর রহমান, সদস্য ও স্বর্ণ কিশোরী সুমাইয়া পারভীন, লিডার্স এর প্রকল্প সমন্বয়কারী মোঃ শওকত হোসেন প্রমুখ।
সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জলবায়ু অধিপরার্শ ফোরামের সদস্য সচিব ও স্বদেশের নির্বাহী পরিচালক মাধব চন্দ্র দত্ত।
মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে উপকূল। উপকূলীয় নদীগুলোর লবণাক্ততা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে উপকূলীয় পানির উৎসগুলো লবণাক্ত হয়ে পড়ায় পানের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। ফলে উপকূলীয় জেলাগুলোতে সুপেয় পানির সংকট বেড়েই চলেছে।
পানির সংকট তুলে ধরে বক্তারা বলেন, বেড়িবাঁধ দুর্বল হওয়ার কারনে লবণ পানি ঢুকে চাষ যোগ্য জমি, সুপেয় পানির আধারগুলো নষ্ট হচ্ছে। চারিদিকে পানি কিন্তু খাবার পানি নেই। চারিদিকে শুধু লবণ পানি। খাবার পানি সংগ্রহ করার জন্য একজন নারীকে ৪/৫ কিলোমিটার দূরে যেতে হয়। যা অমানবিক। পানি উপকূলের মানুষের অধিকার। কিন্তু উপকূলের দরিদ্র মানুষকে পানি কিনে খেতে হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সুপেয় পানির অভাবে মানুষ পুকুরের দুষিত পানি পান করে নানাবিধ পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষ করে নারীরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ভুগছে। পানি সংগ্রহ করতে নারীকে নিরাপত্ত্বাহীনতায় ভুগতে হয়। এমনকি তারা বিভিন্ন ধরণের নিপীড়ণের শীকার হচ্ছে।
উপকূলে এই সংকট সমাধানে সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগ থাকলেও তা যথেষ্ঠ নয়। এর আগে সরকারের কাছে সুপেয় পানি সংকটের জন্য দাবী করা হলেও তার কোন উদ্যোগ নেই। এজন্য অনতি বিলম্বে উপকূলীয় এলাকায় সুপেয় পানির সংকট সমাধান করতে হবে।
বক্তারা আরও বলেন, উপকূলে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে হবে, উপকূলে জলাধার সংরক্ষণ ও নারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ ও উপকূলে উন্নয়ন বোর্ড গঠন করে উপকূলীয় এলাকাকে দুর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করতে হবে।