সাইফুর রহমান শামীম,কুড়িগ্রামঃ কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের বড়ভিটা বাজার সংলগ্ন বামনের কুড়া নালার উপর নির্মিত প্রায় ৭০ ফিট দৈর্ঘ্যের অপ্রশস্ত সেতুটির বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা। সেতুটি নির্মাণের পর দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় ঝুঁকিপূর্ণ অপ্রশস্ত সেতুটির কারণে নালা পারাপারে প্রতিনিয়ত প্রশস্ত ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার হাজার হাজার মানুষকে। গর্ত আর রেলিং বিহীন সেতুটি এখন জনগণের জন্য মরণফাঁদ।
বড়ভিটা বাজার হতে বড়ভিটা ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সগামী সড়কের এই সেতুটির বিভিন্ন অংশে সৃষ্টি হয়েছে বড় গর্ত। ধসে গেছে দুই প্রান্তের দেয়াল। খুঁজেই পাওয়া যায়না সেতুর দুই পাশের রেলিং এর দিশা। সেতুর রেলিং এর দিশা খুঁজে পাওয়া না গেলেও জীবন জীবিকার দিশা খুঁজতে নানা প্রয়োজনে এই সেতুর উপর দিয়েই বড়ভিটা ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সে যাতায়ত করতে হয় গোটা ইউনিয়নের মানুষদের। এছাড়াও বড়ভিটা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, বড়ভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বড়ভিটা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা এই সেতুর উপর দিয়েই বিদ্যালয়ে যাতায়াত করেন। সেতুর আশপাশের গ্রামের প্রসূতি মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা নিতে সেতুটি দিয়ে বড়ভিটা কমিউনিটি ক্লিনিকে আসতে হয়। সেতুটি বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় যে কোন সময় প্রাণহানির মতো মর্মান্তিক দুর্ঘটনার আশঙ্কা স্থানীয়দের।
সেতু অদূরের বাসিন্দা ও বড়ভিটা উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুর ছাত্তার খন্দকার বলেন, সেতুটি দিয়ে শিশু শিক্ষার্থীরাও স্কুলে যাতায়াত করে। সেতুতে গর্ত আর রেলিং না থাকায় যেকোন সময় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে। সেতুটি সংস্কার জরুরী। স্থানীয় সরলা রাণী বলেন, সেতুতে গর্তের কারণে কোন যানযাবহন যাতায়াত করতে পারে। আজকে আমার গর্ভবতী মেয়েকে নিয়ে পায়ে হেঁটে ক্লিনিকে যেতে হচ্ছে। মকছেদুল হক, আমিনুল ইসলাম, মানিক মিয়া সহ বেশ কয়েক জন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, এই রেলিং বিহীন গর্তে ভরা সেতুটির কারণে আমাদের যাতায়াত করতে কষ্ট হচ্ছে। আমাদের ছেলেমেয়েরা স্কুলে যাতায়াত করতে ভয় পায়।আমরাও ছেলেমেয়েদের নিয়ে চিন্তায় থাকি। না জানি কখন কি ঘটে। এভাবে আর কতদিন চলবে? আমরা এখানে একটা প্রশস্ত সেতু নির্মাণে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানাচ্ছি।
বড়ভিটা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিন্টু বলেন, এই সেতুটি ব্যবহার করে আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের যাবতীয় মালামাল আনা নেয়া করতে হয়। সেতুর বেহাল দশার কারণে মালামাল পরিবহনে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। আশপাশের বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের চলাচলেও ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। বর্তমানে সেতুর যে অবস্থা তাতে এটি ভেঙ্গে নতুন করে নির্মাণের কোন বিকল্প নাই। আর এতো বড় সেতু নির্মাণের সক্ষমতা আমার ইউনিয়ন পরিষদের নাই। আমার ইউনিয়নের জনগনের জীবন জীবিকায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুটি দ্রুত পুনঃনির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
সেতুটির বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ ইকবাল রাজিব বলেন, সেতুটি প্রশস্ত করে নতুনভাবে নির্মাণের জন্য যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। আশাকরি চলতি বছরের শেষ নাগাদ সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করা যাবে ইনশাআল্লাহ।