মোঃ খলিলুর রহমান,সাতক্ষীরাঃসাতক্ষীরার তালার দুগ্ধপল্লী খ্যাত জেয়ালার খোদ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতির সভাপতি প্রশান্ত ঘোষকে বিপুল পরিমাণ ভেজাল দুধ, দুধ উৎপাদনকারী উপকরণ জেলিসহ আটক করেছে।পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে ৬ মাসের জেল ও ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদন্ড প্রদান করেন। প্রশান্ত ঘোষ তালা সদর ইউনিয়নের জেয়ালা গ্রামের কালিপদ ঘোষের ছেলে।
মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নিরাপদ খাদ্য ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের যৌথ অভিযানে তাকে আটক করা হয়। অভিযানে জেলা ও তালা থানা পুলিশের একটি চৌকস টিম প্রথম থেকেই সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করেন। জনস্বার্থে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান, আভিযানিক দল।
আভিযানিক টিম সূত্র জানায়, মঙ্গলবার দুপুরে জেলা নিরাপদ খাদ্য কমকর্তা মোঃ মোকলেছুর রহমান, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তর সাতক্ষীরার সহকারী পরিচালক মোঃ নাজমুল হাসান, জেলা সেট্যোরী কর্মকর্তা রথীন্দ্রনাথ সরকার, নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক ও উপজেলা সেনেট্যারী কর্মকর্তা শরিফ মোঃ আব্দুল মতিনের নেতৃত্বে পূর্নাঙ্গ টিম উপজেলার মহান্দি ও জেয়ালার দুধ গ্রামে অভিযান চালায়। এসময় তারা জেয়ালার দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতির সভাপতি প্রশান্ত ঘোষের দুগ্ধ খামারে অভিযান চালিয়ে ভেজাল দুধ তৈরির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ৩৫০ কেজি জেলি এবং অপদ্রব্য মিশ্রিত ৯৬০ লিটার দুধ জব্দ করেন।
পরে অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: রুহুল কুদ্দুসের ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে প্রশান্ত ঘোষকে নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ এর বিধান মতে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড ও ৫ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদন্ড প্রদান করেন। এসময় জব্দকৃত জেলি এবং অপদ্রব্য মিশ্রিত দুধ ধ্বংস করা হয়।
এর একদিন আগে সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলা নিারাপদ খাদ্য ও সেনেট্যারী কর্মকর্তা মো: আব্দুল মতিন উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়নের হাজরাকাটি ঈদগাহ সংলগ্ন এলাকা থেকে বাইসাইকেলে দুধ পরিবহনের ক্যান থেকে দুধ উৎপাদনের উপাদান অপদ্রব্য ১০০ কেজি জেলিসহ উপজেলার মহান্দি এলাকার চিত্তরঞ্জন ঘোষের ছেলে শঙ্কর ওরফে বাবু ঘোষকে আটক করে। পরে অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে তাকে ২ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন।
সূত্র জানায় এরআগে শঙ্কর ওরফে বাবু ঘোষ গত ১ আগস্ট থানা পুলিশের হাতে ৭০০ কেজি জেলিসহ আটক হয়। ঐ ঘটনায় ভ্রাম্যমান আদালত তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এরপরেও বন্ধ নেই সমৃদ্ধ দুগ্ধ পল্লীর আড়ালে ভেজাল দুধ উৎপাদন।
প্রসঙ্গত, ভেজাল দুধ উৎপাদন, ক্ষতিকর দিক এবং উপাদান নিয়ে গত ২ জুন দৈনিক কালের কণ্ঠসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় ফলাও করে তথ্যবহুল প্রতিবেদন প্রকাশ করে। মূলত ঐ ঘটনার পর থেকে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। কর্তৃপক্ষ বলছেন, ভেজাল বন্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস বলেন, শুধু জরিমানা করে ভেজাল দুধ তৈরিকারিদের কোন ভাবেই থামানো যাচ্ছে না,ভেজাল দুধের ব্যবসা করে এরা প্রচুর অর্থের মালিক হয়েছে। তাই এখন থেকে শুধু জরিমানা নয়,ভেজাল দুধ তৈরীর উপাদনসহ কারবারিদের আটক করে জরিমানাসহ কারাদন্ড প্রদান করা হবে।