এম কে মামুন,ঢাকাঃএলিট ফোর্স হিসেবে র্যাব আত্ম্রপ্রাশের সূচনালগ্ন থেকেই আইনের শাসন সমুন্নত রেখে দেশের সকল নাগরিকের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে অপরাধ চিহ্নিতকরণ, প্রতিরোধ, শান্তি ও জনশৃংখলা রক্ষায় কাজ করে আসছে। জঙ্গীবাদ, খুন, ধর্ষণ, নাশকতা এবং অন্যান্য অপরাধের পাশাপাশি মনুষ্য অপরহরণকারী চক্রের সাথে সম্পৃক্ত অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য র্যাব সদা তৎপর।
গত ০২/০৯/২০২২ তারিখ ঢাকা জেলার সাভারে শ্রমজীবী শামসুন্নাহার (৩৫) ও মোহাম্মদ বাদল (৪০) দম্পতি’র ঘরে একটি ফুটফুটে ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। পরবর্তীতে মা ও শিশু উভয়ই সুস্থ থাকায় হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিলে তারা তাদের সাভারের রাজ ফুলবাড়িয়া রাজারহাট এলাকার ভাড়া বাসায় চলে আসে। পরবর্তীতে ০৫/০৯/২০২২ তারিখ আনুমানিক ১৫.০০ ঘটিকার সময় উল্লেখিত দম্পতির পূর্ব পরিচিত মোসাঃ শাহিদা বেগম ও সোহেল রানা দম্পতি তাদের বাসায় ভিকটিম শিশুটিকে দেখতে আসে। ভিকটিম শিশুটির মা শামসুন্নাহার শিশুটিকে মোসাঃ শাহিদা বেগম দম্পতির কোলে দিয়ে অতিথি আপ্যায়নের জন্য রান্নাঘরে যায়। এসময় পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক আসামি মোছাঃ শাহিদা বেগম ও সোহেল রানা দম্পতি মিলে ০৪ দিনের নবজাতক শিশুটিকে চুরি করে দ্রুত পালিয়ে যায়। ভিকটিম শিশুটির মা পরবর্তীতে রান্নাঘর থেকে এসে তাদের দেখতে না পেয়ে দিশেহারা হয়ে তার স্বামী’কে খবর দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ভিকটিম শিশুটিকে এবং মোছাঃ শাহিদা বেগম ও সোহেল রানা দম্পতিকে খোঁজ করে। খোঁজাখুজির এক পার্যায়ে আসামী সোহেল রানা ভিকটিম শিশুটির মা শামসুন্নাহারকে জানায় যে, শিশুটি তার স্ত্রী শাহিদা’র হেফাজতে সিরাজগঞ্জে আছে এবং শিশুটিকে ফেরত পেতে হলে তাদেরকে নগদ ৮০,০০০/- টাকা মুক্তিপণ হিসেবে দিতে হবে। শামসুন্নাহার ও বাদল দম্পতি দিনমজুর হওয়ায় তাদের পক্ষে এত নগদ অর্থ দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় আসামীদ্বয় শিশুটিকে ফেরত দেয়নি। এমতাবস্থায় ভিকটিম শিশুটির মা র্যাব-৪ বরাবর ভিকটিম শিশুটিকে উদ্ধারে অভিযোগ দাখিল করলে র্যাব-৪ এর একটি গোয়েন্দা দল উক্ত ভিকটিম শিশুকে উদ্ধার এবং অপহরণকারীদের গ্রেফতারে ছায়াতদন্ত শুরু করে। একপর্যায়ে গোয়েন্দা তৎপরতায় নিশ্চিত হওয়া যায় যে অপহরণকারীরা ভিকটিম শিশুটিকে নিয়ে সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ এলাকায় অবস্থান করছে। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৪ ও র্যাব-১২ যৌথ আভিযানিক দল গত ০৬/০৯/২০২২ তারিখ রাতে সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ থানাধীন এলাকায় সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করে ০৪ দিনের নবজাতক শিশু’কে উদ্ধারপূর্বক অপহরণকারী আসামী মোছাঃ শাহিদা বেগম (২৬)’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী পলাতক আসামীর সহযোগীতায় মোটা অংকের মুক্তিপণ আদায়ের জন্য ভিকটিম শিশুটিকে অপহরণ করেছে বলে স্বীকারোক্তি প্রদান করেছে।
উক্ত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। অদূর ভবিষ্যতেও এইরুপ শিশু অপহরণকারী চক্রের বিরুদ্ধে র্যাব-৪ এর জোড়ালো অভিযান অব্যাহত থাকবে।