লিপন খান,কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার চান্দপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান ও ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার শহীদুল হক উজ্জ্বলকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে বুধবার (১২ অক্টোবর) মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমীন প্রধান স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খানজাদা শাহরিয়ার বিন মান্নান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কটিয়াদী উপজেলার চান্দপুর ইউনিয়নের মঞ্জিলেরকান্দা গ্রামের আনোয়ার আলী ভূঁইয়া মারাজের বাড়িঘর ভেঙে দখল নিয়ে মালামালসহ লুটপাট করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় তিনি ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান ও মেম্বার শহীদুল হক উজ্জ্বসহ ১৩ ব্যক্তির বিরুদ্ধে গত ১০ আগস্ট ১নং সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দ্রুত বিচার আইনে মামলা করেছিলেন। ১১ সেপ্টেম্বর চেয়ারম্যান-মেম্বারসহ ৯ জন আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করণে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ আফরোজা জামিন আবেদন নাকচ করে সবাইকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বর্তমানে অবশ্য তারা জামিনে রয়েছেন।বুধবার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় চেয়ারম্যান মাহফুজ ও মেম্বার উজ্জ্বলকে সাময়িক বরখাস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে।প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন অনুযায়ী কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করেছিলেন। যেহেতু ওই চেয়ারম্যান ও মেম্বারের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলাটি আমলে নেওয়া হয়েছে, ফলে তাদের পক্ষে ইউনিয়ন পরিষদের ক্ষমতা প্রয়োগ প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণে সমীচীন নয় মর্মে সরকার মনে করে। ফলে চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান ও মেম্বার শহীদুল হক উজ্জ্বল কর্তৃক সংঘটিত অপরাধমূলক কার্যক্রম ইউনিয়ন পরিষদসহ জনস্বার্থের পরিপন্থী বিবেচনায় তাদেরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
প্রজ্ঞাপনের কপি কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক, কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং বরখাস্তকৃত চেয়ারম্যান ও মেম্বারকেও পাঠানো হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ রয়েছে।মামলার বাদী একই ইউনিয়নের মঞ্জিলেরকান্দা গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার আলী ভূঁইয়া মারাজ জানান, চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান তাকে মোবাইলে ফোন করে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হুমকি দিয়েছিলেন। পরে চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান ও মেম্বার শহীদুল হক উজ্জ্বলের নির্দেশে চলতি বছরের ২১ জুন তার বাড়িতে তাদের উপস্থিতিতে হামলা চালিয়ে ঘর ভেঙে লুটপাট করা হয়। ওই ঘটনায় তিনি চেয়ারম্যানকে প্রধান আসামি করে মেম্বার উজ্জ্বল, শরীফ, তাসকিন, বিদ্যুৎ, রুমু, আবল, রবিন ও মাখনসহ ১৩ ব্যক্তিকে আসামি করে ২৭ জুন আদালতে মামলা করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ ৯ জনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।