স্টাফ রিপোর্টারঃ ভোলায় ঘটে যাওয়া ঘূণির্ঝড় সিত্রাংএর প্রভাবে ঘর ও গাছ চাপায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে ৷ ।পরিস্থিতি যদিও কিছুটা স্বাভাবিক।কেটে যাচ্ছে ধীরে ধীরে আতঙ্ক।
আজ মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সকাল থেকেই আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়তে শুরু করেছে এ অঞ্চলের উপকূলের মানুষ। তবে ঝড়ের তাণ্ডবে শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ঘর ও গাছের চাপায় নিহত হয়েছেন তিনজন। এদের মধ্যে ভোলা সদরে একজন, দৌলতখানে একজন ও চরফ্যাশন উপজেলায় একজন রয়েছে।
নিহতরা হলেন- চরফ্যাশনের হাজারিগঞ্জ ইউনিয়নের মনির, দৌলতখানের পৌর ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিবি খাদিজা ও ভোলা সদরের ধনিয়া ইউনিয়নের মফিজল হক।এদিকে সিত্রাংয়ের প্রভাবে গত রবিবার রাত (২৩ শে অক্টোবর) থেকে ভোলায় বিদ্যুৎ বিছিন্ন, ভোলা চরফ্যাশন মহাসড়ক, স্থানীয় সড়ক ও বসতঘরসহ গাছ ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অনেকে। গাছের আঘাতে আহত হয়েছে প্রায় অর্ধশত মানুষ।
উপকূলীয় এলাকায় বেড়িবাঁধের বাহিরে বিপদ সীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়া ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে রয়েছে চরম জন দর্ভোগে সময় পার করছেন সেখানকার মানুষ।
অন্যদিকে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি বৃদ্ধি ও অতি বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতায় মাছের ঘের, পুকুর ডুবে মাছ বেড়িয়ে যায়, কৃষি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়াও রাস্তাঘাট ভেঙে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। এতে অনেক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছেন স্থানীয় মানুষ, যার কারনে ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হতে পারে দেশের অর্থনৈতিক খাতে। কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার প্রাথমিক জরিপ চলমান বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ক্ষতিগ্রস্ত বিল্লাল হোসেন বলেন, ঝড়ে গাছ পড়ে আমার দুইটি অটোরিকশা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে আমর ৩০-৩৫ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে।
তুলাতলী এলাকার নেকু বিবি ও বিবি ফাতেমা বলেন, ঝড়ে আমাদের ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে, আমরা অনেক কষ্টে আছি।
এদিকে মঙ্গলবার সকালে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলেও জেলায় তেমন বৃষ্টিপাত হয়নি। রোদ্র উজ্জল আকাশ। নেই ঝড়ো বাতাসও। স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে আবহাওয়া পরিস্থিতি। ফলে আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়তে শুরু করেছেন মানুষ।
ধনিয়া তুলাতলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়িতে ফিরছিলেন আমিরুন নেছা (৭৫), আছিয়া বেগম (৩৫) ও কুলসুম (২৯)। তারা বলেন, আমরা রাতে আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলাম, এখন চলে যাচ্ছি। আবহাওয়া অনেকটা ভালোর দিকে। তাই পরিবার নিয়ে চলে যাচ্ছি।
এ ব্যাপারে ভোলা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তৌহিদুর ইসলাম বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে, নিহতদের পরিবারে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা দেওয়া হবে।এদিকে উপকূলের বাঁধের বাইরের বহু এলাকা জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। ঘরবাড়ি হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
চরফ্যাশন ও লালমোহনের দায়ীত্ব প্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল নোমান জানান চরফ্যাশনে একজনের মৃত্যু হয়েছে এবং ক্ষয় ক্ষতির তথ্য জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।