এস এম সোহেল,গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরির একটি কারখানা ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসন।( ২১ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার বরিশাল ইউনিয়নে বাসুদেবপুর (নুরিয়াপাড়া) গ্রামে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এসময় পলাশবাড়ী ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মশিউর রহমানের নেতৃত্বে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা প্রথমে কারখানার চুল্লির আগুনে পানি ছিটিয়ে নিভিয়ে দেন। পরে এস্কেভেটর দিয়ে ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অভিযানে উপস্থিত ছিলেন পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কামরুজ্জামান নয়ন, রংপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক হাসন-ই-মোবারক।
উপজেলার বরিশাল ইউনিয়নে বাসুদেবপুর (নুরিয়াপাড়া) গ্রামের নজরুল ইসলাম ও তার জামাতা মিজানুর রহমান যৌথভাবে অবৈধভাবে গড়ে তুলেছিলেন একটি কাঠ পোড়ানো কয়লা কারখানা। তারা প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় বিশেষ ধরনের চুল্লি বানিয়ে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করছিলেন। কাঠ পোড়ানোর সময় নির্গত হয় প্রচুর কালো ধোঁয়া। চুল্লির মধ্যে সারিবদ্ধভাবে কাঠ সাজিয়ে একটি মুখ খোলা রেখে অন্য গুলো মাটি ও ইট দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হতো। খোলা মুখে আগুন দিয়ে সেটিও বন্ধ করে দেওয়া হতো। ৮ থেকে ১০ দিন পোড়ানোর পর চুলা থেকে কয়লা বের করা হতো। প্রতিটি চুল্লিতে প্রতিবার ২০০ থেকে ৩০০ মণ কাঠ পোড়ানো হতো বলে জানিয়েছেন চুল্লি মালিক নজরুল ইসলাম ও মিজানুর রহমান। পোড়ানো কয়লা শীতল করে ব্যবসার উদ্দেশ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছিল।
জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়াই জনবসতি এলাকা ও ফসলি জমি নষ্ট করে এ কাঠ পোড়ানো চুল্লি স্থাপন করা হয়েছিল। লাল মাটি, ইট ও কাঠের গুঁড়া মিশিয়ে তৈরি করা প্রতিটি চুল্লিতে ৮ থেকে ১০ দিনে ২০০ থেকে ৩০০ মণ কাঠ পোড়ানো হতো। এ ধোঁয়ায় যেমন শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগব্যাধি বাড়ছে তেমনি নষ্ট হচ্ছে বনজ সম্পাদ ও ফসলি জমি। কয়লা তৈরির এই প্রক্রিয়ায় পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ওপর বিরুপ প্রভাব পড়ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুজ্জামান জানান, কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করলে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হয়।তাই আজ অভিযান চালিয়ে চুল্লি গুলো ভেঙে দেয়া হয়েছে।