মোঃ হামিদুল ইসলাম,রাজারহাট,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ রাজারহাটে ঐতিহাসিক ৬ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে,উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসনের উদ্যোগে সকালে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভ ও বঙ্গবন্ধু প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ র্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূরে তাসনিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় মুক্তিযুদ্ধকালীন স্মৃতিচারন করে বক্তব্য তুলে ধরেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাজারহাট উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ,রাজারহাট থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুল্লাহহিল জামান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আশিকুল ইসলাম মন্ডল সাবু,উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুজ্জোহা মিল্টন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ন আহবায়ক আনোয়ার হোসেন, উমরমজিদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম তালুকদার ময়নাল সহ উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্যঃ রাজারহাটে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় শত শত নারী পুরুষকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছিল।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষদের সূত্রে জানা গেছে ১৯৭১ ইং সনে মুক্তিযোদ্ধা শুরুর পর পাক বাহিনী রাজারহাট কুড়িগ্রাম সড়কের পার্শ্বে ঠাটমারীতে ক্যাম্প গড়ে তোলে সেখান থেকেই রাজাকার ও তাদের সহযোগীদের মাধ্যমে পরিকল্পনা মাপিক বিভিন্ন স্থানে সাধারণ মানুষের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ নরহত্যা ধর্ষণ লুটপাট সহ নানা বরবচিত কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন পাকিস্তানি সৈন্যরা
যুদ্ধ চলাকালীন প্রায় দিন কোন না কোন স্থান থেকে মুক্তিযোদ্ধার স্বপক্ষের সাধারণ মানুষদের ধরে এনে নানা ভাবে নির্যাতন শেষে গুলি করে হত্যা করত এভাবে কত মানুষকে হত্যা করে লাশ ব্রিজের নিচে পানিতে ভেসে দিয়েছে সঠিক পরিসংখ্যান কেউই জানেনা তবে পানির স্রোতে অগণিত মানুষের লাশ ভেসে যেতে দেখেছে এলাকাবাসী মুক্তিযুদ্ধে ১১ জন মুক্তিযোদ্ধাকে ওই স্থানে গুলি করে হত্যা করা হয় এবং শহীদদের রেকর্ড রয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও সরকারি হিসাবে
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা নানা অপকর্মেরী বদ্ধভূমি মহান মুক্তিযুদ্ধের নানা বেদনা বিদুর ও স্মৃতি বিজড়িত ঘটনার সাথে জড়িত রয়েছে এটি শহীদের সরনারার্থে ২০০৬ সরকারি অর্থায়নে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলা হাটমারি বদ্ধভূমিতে গড়ে ওঠে স্মৃতিস্তম্ভ বিজয়ের মাস আসলে কথা উঠে ঠাটমারির বধ্যভূমির সব লুমর্ষক ঘটনা যারা জানেন এখনো মনে পড়লে তারা শিউরে ওঠেন।
রাজারহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ বলেন আমার বড় ভাই শহি দ প্রকৌশলী আজিজুর হকের ৭১ সনের ৭ ই আগস্ট বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ঠাটমাড়ির
বদ্ধভূমিতে নির্মমভাবে হত্যা করে পানিতে ফেলে দিয়েছিল পাক বাহিনীরা পরদিন এলাকাবাসী সেখান থেকে লাস্টে নিয়ে এসে নিজ বাড়িতে উঠানের পাশে দাফন করে এর আগে পাকবাহিনী রাজাকারেরা একাধিকবার তাদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ লুটপাট করেছিল বলেও জানান
ঠাটমাড়ি থেকে তিন কিলোমিটার দূরে তৎকালীন আওয়ামী লীগ কুড়িগ্রাম মহকুমার সভাপতি আহমেদ হোসেন সরকার টগরেরহাট গ্রামের বাড়িতে অস্ত্র গোলামার ুদ মজুত করা হয় এরপর ওই বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ শেষে প্রথমে পুলিশ আনচার স্থানীয় যুবক ছাত্রদের স্মরণে মুক্তিযুদ্ধের সূচনা হয় তাহারা সক্রিয় হয়ে উঠলে তাদের উত্তরেদের মুখে শেষ অবধি হানাদার বাহিনী পিছু হঠতে শুরু করে
রাজাহাট উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রজব আলি জানান বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন শেষ পর্যায়ে বাংলাদেশ মুক্তিকামী দামাল ছেলেদের প্রতিরোধের মুখে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী রাজারহাট ছেড়ে পালিয়ে যায় ৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ ইং সনে রাজারহাট হানাদার মুক্ত হয় তাই মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে আজকের এই দিনে রাজারহাট উপজেলা প্রশাসন সহ সকল স্তরের মানুষগণ ঠাটমারির বদ্ধভূমিতে এসে বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।