মোঃ সবুজ মিয়া,কুলিয়ারচর,কিশোরগঞ্জঃ কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে এবার যৌতুকের দাবিতে নির্মম নির্যাতনের শিকার হলেন মোছাঃ সুরমা আক্তার (২২) নামে এক গৃহবধূ। গুরুতর আহত অবস্থায় গত ১ জানুয়ারি রোববার বিকালে তাকে কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা হয়। আহত সুরমা আক্তার উপজেলার মধ্য সালুয়া গ্রামের মোঃ সিদ্দিক মিয়ার কন্যা।
সুরমা আক্তারের অভিযোগ তার স্বামী উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের আলী নগর গ্রামের মৃত নুরুজ্জামান ওরুফে আঙ্গুর মিয়ার পুত্র মোঃ কামরুল হাসান সুমন (৩৫) ও তার ছোট ভাই মোঃ দেলোয়ার হোসেন ওরুফে জুয়েল মিয়ার প্ররোচনায় এবং সহযোগিতায় গত ১জানুয়ারি রোববার বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে যৌতুকের দাবিতে তাকে নির্মম ভাবে নির্যাতন করে। অবশেষে তাকে খুন করার উদ্দেশ্যে ধারালো দা দিয়ে তার মাথায় কোপ দিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। এ ঘটনায় ২জানুয়ারি সোমবার রাতে তিনি বাদী হয়ে স্বামী মোঃ কামরুল হাসান সুমন ও দেবর মোঃ দেলোয়ার হোসেনকে আসামি করে কুলিয়ারচর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-২। মামলা রুজু হওয়ার পর ওই রাতেই কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা’র দিকনির্দেশনায় পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে ঐরাতেই মোঃ কামরুল হাসান সুমনকে আটক করে।
সুরমা আক্তারের পিতা সালুয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ড সদস্য মোঃ সিদ্দিক মিয়া জানান, প্রায় ৩ বছর পূর্বে কামরুল হাসান সুমনের নিকট তার মেয়েকে বিবাহ দেয়। বিবাহ দেওয়ার সময় মেয়েকে ৫ ভরি স্বর্ণালংকার ও মেয়ের স্বামী সুমনকে একটি পালসার মোটর সাইকেল দেয়। বিয়ে দেওয়ার এক বছর পর তার মেয়ের স্বামী সুমন ব্যবসা করার অযুহাতে ৫ লক্ষ টাকা যৌতুকের দাবি করে তার মেয়েকে শারিরীক ও মানুষিক নির্যাতন করায় মেয়ের সুখের জন্য দুই ধাপে যৌতুক হিসেবে মেয়ের স্বামী সুমনকে ৪ লক্ষ টাকা দেয়। এতেও সুমন ক্ষ্যান্ত হয়নি। এক মাস যাবৎ পূনরায় যৌতুক হিসেবে আরো ৫ লক্ষ টাকা দাবী করে তার মেয়েকে শারেরীক ও মানুষিক নির্যাতন করতে থাকে সুমন। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় গত রোববার বিকালে কামরুল হাসান সুমন ও দেলোয়ার হোসেন মিলে নির্মম ভাবে নির্যাতন করে অবশেষে দা দিয়ে কুপ মেরে তার মেয়েকে হত্যা করার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে লোকজন নিয়ে মেয়ের শ্বশুর বাড়ি থেকে মেয়েকে গুরুতর রক্তাক্ত ও আহত অবস্থায় উদ্ধার করে কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে ভর্তি করেন তিনি।
কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ আদনান আখতার বলেন, সুরমা আক্তারকে গুরুতর অবস্থায় আনা হয়েছে। তার মাথায় মারাত্বক জখম হয়েছে।শরীরেও একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ ব্যাপারে কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, মোছা. সুরমা আক্তারের লিখিত অভিযোগ পেয়ে সোমবার রাতে মামলা রুজু করে রাতেই তার স্বামী মোঃ কামরুল হাসান সুমনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।