শাহজাদপুর,সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ আজ ২৬ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখ বৃহস্পতিবার রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে সাড়ম্বরে বিদ্যাদেবী সরস্বতীর আরাধনার আয়োজন করা হয়। এজন্য গতকাল থেকেই একাডেমিক ভবন-১ বর্ণিল সাজে সজ্জিত করা হয়। আজ সকাল থেকেই অগণিত শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের প্রাণবন্ত পদচারণায় মুখরিত ছিল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। সকাল ১০:০০ ঘটিকায় পূজা আরম্ভ হয়ে ১১:০০ ঘটিকায় পুষ্পাঞ্জলি দেওয়া হয়। অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক বিজন কুমারের সঞ্চালনায় বরুণ চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে বাণী অর্চণা উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ শাহ্ আজম।
উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ শাহ্ আজম বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে মূলমন্ত্রকে সামনে নিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সূচনা করে বিজয় অর্জন করেছিলেন, অসাম্প্রদায়িকতা তার মধ্যে অন্যতম মন্ত্র। ৩০ লক্ষ শহীদ ও দুই লক্ষ মা বোনের সর্বস্ব ত্যাগ এর বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা লাভ করেছি। সেখানে আমরা যে চার মূলনীতিকে সম্বল করে পথ চলেছি, বঙ্গবন্ধু কন্যা যে মূলনীতিকে তার নিজের পথ চলার সঙ্গী করেছেন সেটি হচ্ছে অসাম্প্রদায়িকতা, গণতন্ত্র, সামাজিক ন্যায্যতার প্রশ্নে সমাজতন্ত্র এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদ এই চার মূলনীতির মধ্যে অসাম্প্রদায়িকতা একটি বড় মূলনীতি আমাদের, সেটির চর্চায় আমরা প্রতিশ্রুত ও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয ক্যাম্পাসে বাণী অর্চনার মধ্যদিয়ে প্রমাণ করলো যে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনার শিক্ষাকে বিস্তারের দায়িত্ব নিয়েছে।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য রবি উপাচার্য বলেন, আপনাদের প্রার্থনায় মানবজাতির কল্যাণের কথাটি রয়েছে, দেশের সমৃদ্ধির কথা রয়েছে, নিজেদের সমৃদ্ধি ও পরিবারের সমৃদ্ধির কথা আছে। এই সবকিছুর মধ্যেই কিন্তু আমরা কল্যাণের যে বার্তাটি পাই সে ক্ষেত্রে আপনাদের মাধ্যমেই আমরা আমাদের একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ দেখতে চাই, বিশেষ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বপ্নটি দেখেছিলেন ক্ষুধা দারিদ্র্যমুক্ত একটি সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করার এবং তারই কন্যা যেভাবে সেটিকে সামনে নিয়ে একটি সমৃদ্ধির বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্বপ্নটি দেখছেন, আমাদের সেই সমৃদ্ধির অভিলক্ষ্য যেন পূরণ হয় সেই প্রার্থনাও আজকে আপনারা করছেন। রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় যেন তাদের যে লক্ষ্য, যে শিক্ষা আদর্শ সেই শিক্ষা আদর্শ যেন প্রতিপালন করতে পারে এবং সেখান থেকে বিচ্যুত না হয় সেই প্রার্থনাটি আপনারা করবেন এবং আপনারা রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষা আদর্শকে বেগবান করতে পারেন সেজন্য নিজেরা তৈরি হবেন।
তিনি বলেন, আমরা যেহেতু অসাম্প্রদায়িক ধারণা পোষণ করি সুতরাং আমাদের যে ক্যাম্পাস সেই ক্যাম্পাসে সেটির একটি প্রতিফলন থাকবে তা আমরা এখন থেকেই শুরু করেছি। আমরা এখনো আমাদের ক্যাম্পাসে যেতে পারিনি। আমরা স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ করলে সেখানে মসজিদের পাশাপাশি অন্য সকল ধর্মের জন্য তাদের উপাসনা করবার জন্য সুযোগ তৈরি করবো, এটির পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। উপাচার্য মহোদয়, আগামীতে আরো বড় পরিসরে দেবী আরাধনার সুযোগ সৃষ্টি করার প্রতিশ্রতি প্রদান করেন। আজকের এই মহৎ দিনে আপনারা ভালো থাকুন, আমি যেহেতু অন্য ধর্মের মানুষ রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে এই প্রার্থনা টি দেখার সুযোগ আমার জন্য অত্যন্ত গৌরবের বলে মনে করছি।
এসময় দেবশ্রী দোলন, পিংকী রানী দে, রাজীব অধিকারী, ইয়াতসিংহ, প্রশান্ত পোদ্দার, অনুরাধা মন্ডলসহ রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন। পূজা শেষে সকলের মাঝে প্রসাদ বিতরণ করা হয় এবং বিকেলে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।