মোঃ কামাল হোসেন খাঁন,মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধিঃ কর্মক্ষেত্রে চাকুরিজীবীদের ছুটি থাকলেও কৃষকদের কোনো ছুটি নেই। একটার পর একটা কৃষিকাজ লেগেই থাকে। আর কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকতে হয় কৃষকদের। আমন ধান কাটার পরে শুরু হয়ে যায় বিভিন্ন কৃষি আবাদ। শাক-সবজি, গম, ভুট্টাসহ নানা ধরনের চাষাবাদ শেষ হতে না হতেই আবার শুরু হয়ে যায় ইরি-বোরো ধান রোপণের সময়। এখন ইরি-বোরো ধান লাগানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন মেহেরপুরের কৃষকরা।
সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি ইরি-বোরোর জমি তৈরী ও চারা রোপণ কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। কেউ বা জমিতে হাল চাষ দিচ্ছেন। কেউবা ইরি-বোরো ধানের চারা রোপন করছেন। যারা আগাম চারা রোপন করেছেন তারা সেই জমিতে সেচ দিচ্ছেন। বিগত বছরগুলোতে বাজারে ইরি-বোরো ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়া ও বিভিন্ন ফসলের আবাদ করতে সার, সেচ ও কীটনাশকসহ অন্যান্য উপকরণের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষকরা। এবার সকল হতাশাকে দূরে ঠেলে দিয়ে আবারও বুকভরা আশা নিয়ে মাঠে নেমেছেন কৃষকেরা।
সরেজমিনে মেহেরপুর সদর, গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মাঠে ইরি-বোরো ধান রোপন করতে দেখা যায় কৃষকদের। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বোরো ধানে বাম্পার ফলনের আশা কৃষকদের।
মেহেরপুর সদর উপজেলার বুড়িপোতা ইউনিয়নের হরিরামপুর গ্রামের কৃষক আব্দুস সালাম জানান, আমন ঘরে তোলার পর প্রচন্ড শীত উপেক্ষা করে বোরো ধাম চাষে নতুন স্বপ্ন নিয়ে মাঠে নেমেছেন তারা। ইরি-বোরো চাষের গুরুত্বপূর্ণ সময় পৌষ-মাঘ। এ দু’মাস বোরো জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে হয়। চারা রোপণে সময়ের শৈত্য প্রবাহ ও কুয়াশা তাদের দমাতে পারে না। তাই ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করছেন। তিনি এবার ৫ বিঘা ইরি-বোরো ধান রোপন করেছেন এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন।
বারাদী গ্রামের কৃষক মিজান জানান, ৩ বিঘা জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষ করছেন। ফলন ভালো হলে তিনি লাভবান হবেন বলে মত প্রকাশ করেন।
সোনাপুর গ্রামের শাহাবুদ্দিন জানান, এলাকায় আগের তুলনায় বেশি পরিমাণ জমিতে ধান চাষ হয়েছে।
মাইলমারী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ জানান, এলাকায় সবজি চাষির সংখ্যা বেশি হলেও প্রতিদিন খাবারের চাহিদা মেটাতে ধান চাষও বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ বাজারে চালের উচ্চ মূল্য হওয়ায় তা কিনে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয় অস্বচ্ছল পরিবারের সদস্যদের।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শংকর কুমার মজুমদার জানান, মেহেরপুর জেলায় এবার প্রায় ২০ হাজার ১’শ ৭৫ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবছর জেলায় বোরো ধানের ফলন ভালো হবে বলে আমরা আশাবাদী।