এস এম সোহেল,গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে বন্ধুত্ব ও প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রতারণার অভিযোগে পৃথক দুটি ঘটনায় এক নারী সহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ।
রবিবার (৫ মার্চ) জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মিট দ্যা প্রেসে সাংবাদিকদের ফাঁদে ফেলে প্রতারণার তথ্য প্রকাশ করে।
এসময় প্রথম ঘটনার বর্ণনায় জানানো হয়- সাঘাটা উপজেলার কচুয়া গ্রামের মো. আজিজার রহমানের ছেলে ভুক্তভোগী আপেল মাহমুদ (৩০) এর সাথে আসামী রুবেল শেখ ও জুয়েল আকন্দ’র মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ১৫দিন আগে পরিচয় হয়। নিয়মিত কথাবার্তায় তাদের মধ্যে সু-সম্পর্ক তৈরি হয়। সে সুবাদে আসামিদ্বয় ভুক্তভোগী আপেল মাহমুদকে গত শুক্রবার (৩ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টায় গোবিন্দগঞ্জে মিথ্যা প্রলোভনে ডেকে আনে। পরে ভিকটিমকে সাথে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরির পর নূরজাহান আবাসিক হোটেলের ২০৯ রুমে ওঠে। সেখানে তাকে আটকে রেখে প্রতারণামূলক নগ্ন ছবি ও অশ্লীল ভিডিও তৈরি করার হুমকি প্রদর্শন করে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে।
টাকা আদায়ে ভুক্তভোগীর পরিবারের লোকজনদের উপর ফোনে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। পরিবারের কাছ থেকে টাকা আদায়ে তারা ভুক্তভোগীকে মারপিট করে ১৮ হাজার টাকা ও কাছে থাকা একটি রিয়েলমি-সি-২৫ অ্যান্ড্রয়েড ফোন কেড়ে নেয়।
এদিকে ভিকটিমের পরিবারের লোকজন গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশের শরণাপন্ন হলে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ভুক্তভোগী আপেল মাহমুদকে উদ্ধারে অভিযান শুরু হয়। গাইবান্ধা জেলা পুলিশ সুপার মো. কামাল হোসেনের সার্বিক দিক নির্দেশনায় সহকারী পুলিশ সুপার (সি-সার্কেল) উদয় কুমার সাহার নেতৃত্বে গোবিন্দগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ইজার উদ্দিন, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. বুলবুল ইসলাম, এসআই প্রলয় কুমার বর্মা, এসআই রাশেদুল ইসলাম, রেজাউল করিম ও সঙ্গীয় ফোর্স সহ অভিযানে ভিকটিম আপেল মাহমুদকে নূরজাহান আবাসিক হোটেল থেকে উদ্ধার এবং আসামীদেরকে গ্রেফতার করে।
অপরদিকে একই উপজেলার জঙ্গলমারা একটি বাসা থেকে প্রেমে ফাঁদে ফেলে আটকে রাখা নুরুল ইসলাম (৩১) কে উদ্ধার করে গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশ। নূরুল ইসলাম ফুলছড়ি উপজেলার দক্ষিণ কুঠির (উদাখালী) এলাকার এনছার আলীর ছেলে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, বিগত প্রায় ১০ দিন পূর্বে আসামী মোছা. মেহনাজ আক্তার সাথীর সাথে “ইম্যু” এর মাধ্যমে পরিচয় হয় নুরুল ইসলামের। সেখান থেকে দু’জনার মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। সেই সুবাদে ভিকটিমকে মিথ্যা প্রলোভন দিয়ে প্রতারণমূলক গোবিন্দগঞ্জ থানা এলাকার ডেকে নেন ওই নারী। তারা দু’জনে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করে তার ভাড়া বাসা গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার জঙ্গলমারা এলাকায় আসে। সেখানে পরিকল্পনামাফিক মেহনাজ আক্তার সাথীর স্বামী মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ এবং তার সহযোগী আসামী মো. ফাহিম ভিকটিমকে বাসায় আটকে জিম্মি করে। এসময় নুরুল ইসলামের কাছে থাকা দেড় হাজার টাকা ও তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি কেড়ে নিয়ে এলোপাথারী মারপিট করে।
তারা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরিবারের লোকজনদের কাছে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। অতঃপর ভিকটিমের পরিবারের লোকজন গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশের শরণাপন্ন হলে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রথম ঘটনার ন্যায় কর্মকর্তাদের বিশেষ অভিযানে জঙ্গলমারা মৌজাস্থ ডায়াবেটিস হাসপাতালের পিছনে আসামীর ভাড়া বাসা থেকে ভিকটিম মো. জহুরুল ইসলামকে উদ্ধার করে এবং আসামীদের গ্রেফতার করে।
পৃথক দুটি ঘটনায় গাইবান্ধা জেলার পুলিশ সুপার মো. কামাল হোসেন গাইবান্ধাবাসী এবং দেশের সকল নাগরিকদের এ সকল প্রতারকদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সর্বদা সতর্ক থাকার আহবান জানান।
সর্ম্পকিত খবর সমূহ..
September 18, 2024
September 17, 2024