মোঃ কামাল হোসেন খাঁন,মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধিঃ মেহেরপুরে শসার ফলন ভালো না হওয়া ও বাজার মূল্য দুটোতেই হতাশ কৃষকরা। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি শসা ও খিরা ৪০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হলেও পাইকারী ব্যবসায়ী কিনছেন ১৬ থেকে ১৮ টাকা কেজি দরে। বর্তমান বাজার মূল্য কম হযওয়ার কারণে ও ফলন কমে যাওয়াযসহ শসার গাছ মরে যাওয়ায় হতাশায় ভুগছেন কৃষকরা। মাহে রমজান কে কেন্দ্র করে জেলায় প্রচুর আগাম শসার চাষ হয়ে থাকে। আগাম চাষীরা বাজার মূল্য ভালো পাওয়ায় অধিকাংশ চাষী আগাম শসার চাষ করেন। কিন্তু এবছরে পড়েছেন বিপাকে। রমজানের শুরুতে প্রতি কেজি শসা পাইকারী ৪৫/৫০ টাকায় বিক্রি করলেও কয়েকদিন যেতে না যেতেই তা ৪০ টাকা, পরে ২৫ টাকায় বিক্রি করলেও এখন ১৬ থেকে ১৮ টাকায় বিক্রি করছেন। পাইকারী ব্যবসায়ীরা ১৬/১৮ টাকায় কিনলেও খুচরা বাজারে প্রতি কেজি শসা ও খিরা ৪০/৬০ টাকা কেজি দরে কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সাধারণ ক্রেতাদের।
মেহেরপুর সদর উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় শসার ব্যাপক চাষ হয়েছে। পবিত্র রমজান মাসকে সামনে রেখে শসার চাষ বেড়ে যায় কিন্তু এবছর রমজান মাসে কৃষকরা কাঙ্ক্ষিত মূল্য না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন।
গহরপুর গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম ও কেরামত আলী জানান, তাদের জমিতে শসার ফলন মোটামুটি ভালো হলেও ২/১ বার শসা তোলার পর গাছ মরতে বসেছে। তিনারা জানান, ৩৩ শতক জমিতে শসা চাষ করতে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা মত খরচ হয় কিন্তু এখন পর্যন্ত ২/৫ হাজার টাকার মতো শসা বিক্রি হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে শসা তুলতে ৫ মণ শসাও পাওয়া যাচ্ছে না। সোনাপুর গ্রামের কৃষকদের সাথে আলাপকালে কৃষকরা জানান, বর্তমান পাইকারী বাজারের শসার দাম কম তাই যে টাকা দিয়ে জমিতে শসা উৎপাদন করা হয়েছে তা বিক্রি করে পাওয়া যাচ্ছে না। শসার দাম না থাকায় কৃষকরা শ্রমিকদের ঠিকমতো মজুরি দিতে পারছেনা। প্রতিদিন জন প্রতি মজুরকে ৪’শ হতে ৫’শ টাকা মজুরি দিতে হয়।
জেলার শসা ক্রয়কারী পাইকার আলেহীম জানান, ক্রেতার কাছ থেকে কম দামে ক্রয় করা হলেও পরিবহন খরচ বেশি দিতে হয়। এ অনুপাতে কিছু লাভ করে তারা ক্রেতাদের কাছ থেকে শসা কিনে বিক্রি করেছেন ৫০/৫৫ টাকায়। কিন্তু বাজার মূল্য কম হওয়ায় তা এখন ১৬/১৮ টাকা কেজি দরে কিনতে হচ্ছে।
এদিকে বর্তমান পাইকারী বাজার মূল্যে ১৬/১৮ টাকায় ক্রয় করা হলেও গাংনী উপজেলার ধানখোলা ইউনিয়নের ভাটপাড়া বাজারে তা ৪০/৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। শহরের বাজার গুলোতেও ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে করে কাঙ্খিত মুনাফা না পেয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছেন শসা চাষীরা। পাইকারী ও খুচরা মূল্যে আকাশ পাতাল তারতম্যের বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন ভুক্তভোগী শসা চাষীরা।