লিপন খান,কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ কিশোরগঞ্জে হত্যার পর মাটি চাপা দেয়া মামলার রহস্য উদ্ঘাটন ও তিন জনকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। গত ২০-০৩-২০২৩ ইং তারিখে বিকাল অনুমান ৪.০০ ঘটিকার সময় সোহান আহাম্মেদ আলিফ (২৩) দুপুরের খাবার খেয়ে একটি দর্জির দোকানে কাজের উদ্দেশ্যে বাড়ি হতে বের হয়ে নিখোঁজ হওয়ার পর তার মা মোছাঃ হাওয়া আক্তার আত্বীয়-স্বজনদের নিয়ে সোহান আহাম্মেদ আলিফ(২৩) কে আত্বীয়-স্বজনদের বাড়ি সহ সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজা-খুঁজি করেও কোনো সন্ধান না পেয়ে গত ইং ২৮-০৩-২০২৩ তারিখে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। উক্ত সাধারন ডায়েরির প্রেক্ষিতে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই (নিঃ) মোঃ রফিকুল ইসলাম ঘটনাটি তদন্ত করার জন্য ভিকটিমের বাড়ি, আশেপাশের এলাকা, পার্শ্ববর্তী গ্রামসহ সম্ভাব্য সকল স্থানে অনুসন্ধান করে উলুহাটি সাকিনস্থ গাউসুল আযম গোরস্থানের জন্য বরাদ্দকৃত জমির ভিটায় উপস্থিত হইলে হঠাৎ নাকে দুর্গন্ধ আসলে সন্দেহ হওয়ায় বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান। এর প্রেক্ষিতে কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার, জনাব মোহাম্মদ রাসেল শেখ, পিপিএম (বার) ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্), জনাব মোঃ আল-আমিন হোসাইনসহ অফিসার ইনচার্জ, কিশোরগঞ্জ মডেল থানা উক্ত স্থানে হাজির হয়ে ইংরেজি ২৯-০৩-২০২৩ তারিখ বেলা অনুমান ১২.৩০ ঘটিকার সময় মাটি খুড়িয়া পচাঁ-অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেন। ভিকটিমের প্যান্ট ও বেল্ট দেখে তার মা মোছাঃ হাওয়া আক্তার প্রাথমিকভাবে তার ছেলে বলে সনাক্ত করেন। তদন্তকারী কর্মকতা লাশটি সুরতহাল শেষে ময়না তদন্তের জন্য আধুনিক সদর হাসপাতাল, কিশোরগঞ্জের মর্গে প্রেরণ করেন। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে নিহতের মা বাদী হয়ে পাচঁ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৬/৭ জনের বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর পরই মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জনাব শ্যামল চৌধুরী এজাহারনামীয় আসামী ১। আনন্দ (১৭) ও ২। হুমায়ুন কবির (২৮) দ্বয়কে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করেন। এই মামলার এজাহারনামীয় মূল আসামি মাসুদকে অদ্য ০২-০৪-২০২৩ ইং তারিখে সকাল ৬.১০ ঘটিকার সময় মহিনন্দ ইউপির ভাস্করখিলা গ্রাম হতে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামী মাসুদ এর দেখানো মতে হত্যার পূর্বে সেবনকৃত ঘুমের ট্যাবলেটের খালি পাতা, খালি কাশির সিরাপের বোতল, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত লাঠি ও লাশ গুম করার জন্য গর্ত খোঁড়ার কাজে ব্যবহৃত দুটি কোদাল উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়। মাসুদকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তিনি তার ভাগ্নেকে উপহার দেওয়ার জন্য কেনা রূপার বিছা চুরির সন্দেহে ভিকটিমকে ডেকে এনে সহযোগিদের নিয়ে রাতের আঁধারে হত্যার পর ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য মৃতদেহটি মাটি চাপা দেয়।আসামিরা বিজ্ঞ আদালতে সিআরপিসি, ১৮৯৮ এর ১৬৪ ধারা মোতাবেক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা সংক্রান্তে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।