মোঃ মজিবর রহমান শেখঃ ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় প্রায় দুই বিঘা জমিজুড়ে ডালপালা ছড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে শত বছর বয়সী একটি সূর্যপুরী আমগাছ। দূর থেকে বটগাছের মতো দেখতে বিশালাকারের এই আমগাছের অবস্থান বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার আমজানখোর ইউনিয়নের হরিণমারী সীমান্তের মন্ডুমালা গ্রামে। প্রতিনিয়ত দেশ-বিদেশের পর্যটকরা একনজর গাছটিকে দেখার জন্য মন্ডুমালা গ্রামে ভিড় করেন। বিশালাকারের আমগাছটি ৭৪ শতক অর্থাৎ প্রায় দুই বিঘারও বেশি জায়গাজুড়ে বিস্তৃত বলে জানিয়েছেন এর মালিক। ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, আমের একটি জাতের নাম সূর্যপুরী। ঠাকুরগাঁও জেলার মানুষের প্রিয় এক আমের চাহিদা পুরো দেশজুড়ে। সুস্বাদু, সুগন্ধী, রসালো আর ছোট আঁটি সূর্যপুরীর বৈশিষ্ট্য। গাছটির উচ্চতা প্রায় ৮৫ ফুট; পরিধি প্রায় ৩৫ ফুট। মূল গাছের তিন দিকে অক্টোপাসের মতো মাটি আঁকড়ে ধরেছে ১৯টি মোটা মোটা ডাল। গাছের মালিক নূর ইসলাম জানান, বয়সের ভারে ডালপালা নুয়ে পড়লেও গাছটির শীর্ষভাগে আছে সবুজের সমারোহ; এখনও পুরো গাছজুড়ে আম ধরে। “গত বছর এ গাছ থেকে প্রায় এক লাখ টাকার আম বিক্রি করা হয়েছিল। এবারও আশা করি, এবার লক্ষাধিক টাকার আম বিক্রি হবে।”দিনাজপুর থেকে আমগাছটি দেখতে আসা নুরজামান বলেন, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক দিন ধরেই দেখছি, এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বড় আমগাছটি বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় । তাই আজ সচক্ষে দেখার জন্য এখানে আসা। সত্যিই আমগাছটি নিজ চোখে না দেখলে বোঝার উপায় নেই এর বিশালতা।”পঞ্চগড় থেকে আসা শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে আমগাছটি দেখতে এসেছি। গাছটি দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। এর ডালপালা লতার মতো চারদিকে ছড়িয়ে রয়েছে।”নীলফামারী থেকে আসা গৃহবধূ নাসিমা আক্তার বলেন, “এর আগে কখনও এত বড় আমগাছ দেখিনি। যে কেউ এক নজর দেখলে মন কাড়বে। এটি সংরক্ষণ করা দরকার এবং এই স্থানটিকে পিকনিক স্পট হিসেবে গড়ে তোলা দরকার।”গাছ মালিক জানান, এই আমগাছটি তার দাদার বাবা রোপন করেছিল। সরকারিভাবে সহযোগিতা পেলে এ গাছটিকে ঘিরে একটি পিকনিক স্পট করা সম্ভব বলে মনে করেন নূর ইসলাম। ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, “ঠাকুরগাঁও জেলায় এই আমগাছটি এশিয়া মহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় সূর্যপুরী আমগাছ। গাছটি রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য আমরা সার্বক্ষণিকভাবে তদারকি করি। যারা এখনও এটি দেখননি তাদের বলতে চাই- একবারও হলেও চলে আসুন গাছটি দেখার জন্য।”ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, “ব্যক্তিমালিকানাধীন গাছটিকে ঘিরে পর্যটকদের জন্য ব্যক্তি উদ্যোগে কেউ রেস্তোরাঁ ও রেস্ট হাউজ করতে চাইলে প্রধান্য দেওয়া হবে।”