জাহাঙ্গীর খাঁন,সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টারঃ কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় এক সময় শহর ও গ্রামের পাড়া-মহল্লায় বাড়ির সামনে দিয়ে উচ্চস্বরে বলতে শুনা যেতে। শিল-পাটা ধার, তালা-চাবি সারা এখন আর তেমন হাঁক-ডাক শোনা যায় না। যন্ত্র আর সমাজ-সভ্যাতা পরিবর্তনের হাওয়ায় হারাতে বসেছে শিল-পাটা ও তালা-চাবি মেরামতের এ পেশা।
শিল-পাটা খোদাই কাজে ব্যস্ত আব্দুর রহমান (৫৭)। কথা হয় আব্দুর রহমানের সাথে। আব্দুর রহমান জানান, তাঁর স্থায়ী বাড়ী পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলায়। আগে পৌত্রিক পেশা কৃষি কাজ করতেন তিনি। স্ত্রী ২ ছেলে ও ২ মেয়ে নিয়ে সংসার তার।
আব্দুর রহমান আরো বলেন, গ্রামের অন্যদের দেখে এ পেশায় আগ্রহী হয়েছেন। প্রান্তিক পর্যায়ের দিন এনে দিন খাওয়া এই মানুষটি। এখন গ্রামের প্রায় প্রতিটি হাট বাজারে মশলা গুড়ো মিল গড়ে উঠেছে। মধ্যম আয়ের প্রতিটি পরিবারেই রয়েছে ব্লেন্ডার মেশিন। এ কারনে আগের মতো আয়-রোজগার হয়না। ছোট বড় মানভেদে ৩০ থেকে ৪০ টাকায় শিল পাটা খোদাই করেন তিনি। প্রতিদিন গড়ে ১২ থেকে ১৫টি মতো খোদাই কাজ করে তার আয় ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা রোজগার। রোজগার কম বলে প্রতিদিন ঘরে ফিরতে পারেন না রহমান। যে এলাকায় কাজের সন্ধানে প্রবেশ করেন সপ্তাহ খানেক কোথাও অবস্থান করে ফেরেন বাড়িতে। খাবার, গাড়ি ভাড়া সহ দৈনিক রহমানের খরচ ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। রোজগার কম বলে খুড়িয়েই চলছে তার সংসার। তিনি বলেন, গ্রামের প্রতিটি ঘরে এক সময় শিল-পাটা থাকলেও এখন তেমন একটা চোখে পরে না। এ কারনে রোজগারও কমেছে রহমানের। বাধ্য হয়ে এ পেশার পাশাপাশি তালা-চাবি মেরামতের কাজও করেন তিনি। জীবিকার তাগিদে বাধ্য হয়েই বিলুপ্ত প্রায় দু’পেশাকে এক করেছেন তিনি।
শিল পাটা ধার, তালা চাবি মেরামত পেশার এক সময় কদর থাকলেও এখন এ পেশা বিলুপ্তির পথে। মুলত যান্ত্রিক সভ্যতার কাছে এ পেশা টিকতে পারছে না।