মোঃ খলিলুর রহমান,সাতক্ষীরাঃ প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি বাংলাদেশ। ষড়ঋতুর বর্ষা এক অনন্য ঋতু। বর্ষার আগমনকে স্বাগত জানায় কদম ফুল। গোলাকার সাদা হলুদ রঙে মিশ্রিত ফুলটি দেখতে যেন ভোরের উষা। রূপসী তরুর অন্যতম রূপবতী হলো কদম ফুল। কদম ফুলের সৌন্দর্য্যে বিমোহিত হন না এমন বেরসিক মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। বর্ষায় প্রেমিকার মনোরঞ্জনে কদমের জুড়ি নেই। বর্ষার প্রকৃতি বাংলা সাহিত্যে এনে দিয়েছে স্নিগ্ধতা। বর্ষার উপহার সোনা রঙের কদম ফুল নিয়ে রচিত হয়েছে নানা গল্প, উপন্যাস, কবিতা আর গান।
বর্ষায় ফুলের রানি কদম। গাছে গাছে সবুজ পাতার ডালে গোলাকার মাংসল পুষ্পাধার আর তার থেকে বের হওয়া সরু হলুদ পাপড়ির মুখে সাদা অংশ কদমকে সাজিয়ে তুলেছে ভিন্নভাবে। গোলাকার হলদে-সাদা মিশ্রিত ফুলটি দেখতে যেন ভোরের উষা।
বর্ষার মেঘের সঙ্গে মিতালি বলেই এর আরেক নাম মেঘাগমপ্রিয়। আর নারীর সৌন্দরে্যর সঙ্গে তুলনা করে অনেকেই বলে ললনাপ্রিয়। এ ছাড়াও বিভিন্ন নামেও কদমের পরিচিতি আছে। ভিন্নতার ছোঁয়াতে কদম হয়ে উঠেছে আরও বেশি গ্রহণযোগ্য। আষাঢ়ে বাদলের দিনে আগমন ঘটেছে হৃদ্মোহিনী কদম ফুলের। তাই তো বৃষ্টির অবিরাম বর্ষণের সঙ্গে সহসাই ভেসে আসে কদম ফুলের রেণুর মিষ্টি সুবাস। কদম আর বর্ষা একে অপরকে আলিঙ্গন করে রয়েছে বহুকাল ধরে। কদম ছাড়া বর্ষা যেন একেবারেই বেমানান। এ জন্য কদম ফুলকে বলা হয় বর্ষার দূত।
কদম ফুল দেখতে বলের মতো গোলাকার। কদমের একটি পূর্ণ মঞ্জরীকে সাধারণত একটি ফুল মনে করা হলেও এটি অজস্র ফুলের সমাহার। এর একটি মঞ্জরীতে প্রায় আট হাজার ফুল বিন্যস্ত থাকে। কদম ফুল দেখতে বলের মতো গোল, মাংসল পুষ্পাধারে অজস্র সরু সরু ফুলের বিকীর্ণ বিন্যাস।
শিল্প-সাহিত্যের ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে কদম ফুলের অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে। কদম ফুল বর্ষার দূত। জৈষ্ঠ্যের শেষে আষাঢের শুরুতে কদম ফুল ফোটে। উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরার বিভিন্ন গ্রাম গঞ্জে কদম ফুল গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে। কদম ফুলের মৌ মৌ গন্ধে আর দৃষ্টিনন্দন রুপ সবার নজর কাড়ছে। বর্ষার অনুভূতি ও অপরূপ সৌন্দরে্যর দাবিদার কদম ফুল। তবে কদম গাছ কমে যাওয়ায় এখন মানুষ ঐতিহ্য ভুলতে বসেছে। ফলে হারিয়ে যেতে বসেছে কদম ফুলের গাছ। আষাঢের কদম গাছ ফুলে ফুলে ভরে থাকত। কদম ফুল সৌন্দরে্য পিপাসুদের তৃপ্তি দিত। তরুণ-তরুণীরা কদম ফুল তাদের প্রিয়জনকে উপহার দিত। মেয়েরা পরতো খোঁপায়।খেলায় মেতে উঠত শিশুরা। কদম গাছ কমে যাওয়ায় এখন মানুষ ঐতিহ্য ভুলতে বসেছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সংস্কৃতি ঐতিহ্য রক্ষায় কদম গাছ লাগানো দরকার।