মোঃ রেজাউল করিম,ঈদগাঁও,কক্সবাজারঃ টানা কয়েকদিনের ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের উজানের পানিতে প্লাবিত হয়েছে ঈদগাঁওর বিস্তীর্ণ এলাকা। বন্ধ রয়েছে বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। চরম ভাবে ব্যাহত হচ্ছে জনজীবন। এ রিপোর্ট লেখার সময় অবিরাম বর্ষণ অব্যাহত থাকায় আরো কয়েকদিনে এ দুর্ভোগ থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
প্রাপ্ত তথ্যের প্রকাশ, বেশ কয়েকদিন যাবত অব্যাহত রয়েছে ভারি বর্ষণ। সাথে ঈদগাঁও খাল থেকে নামছে পাহাড়ি ঢলের পানি। যা বিস্তীর্ণ এলাকায় ঢুকে সাধারণ লোকজনের প্রাত্যহিক চলাচল কে বাধাগ্রস্ত করছে। উপজেলার ঈদগাঁও, জালালাবাদ, ইসলামাবাদ, পোকখালি, ইসলামপুরসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখন পানি আর পানি। সংশ্লিষ্ট গ্রামাঞ্চলের লোকজন এক প্রকার পানিবন্দী জীবনযাপন করছেন। ঈদগাঁও বাজার ও সংলগ্ন এলাকা পার্শ্ববর্তী খালের পানিতে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। জাগির পাড়া, বৃহত্তর মাইজ পাড়া, সওদাগর পাড়া, ছাতি পাড়া, লরাবাগ, বাঁশঘাটা, ইউছুফেরখিল, পালাকাটা, দরগাহ পাড়াসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে। জেলার প্রাচীনতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় আঙ্গিনায় এখন হাঁটু পানি পানি। গত কয়েকদিন যাবত কর্তৃপক্ষ এ প্রতিষ্ঠানের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রেখেছেন। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান খুরশীদুল জন্নাত জানান, পার্শ্ববর্তী ঈদগাঁও খালের পানি ও একটানা বর্ষণে বিদ্যালয় মাঠ পানিতে সয়লাভ হয়ে উঠেছে। একাডেমিক ভবনের নিচ তলায় পানি ঢুকে পড়ায় একাডেমিক কার্যক্রম পরপর তিন দিন স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।
তিনি জানান, ঈদগাঁও খালে স্থায়ী ও টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মিত না হওয়ায় সহজেই খালের পানি বিদ্যালয় মাঠে প্রবেশ করে।
অত্র প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী সোনাধন জানান,
নিচ তলার বিভিন্ন ক্লাসরুম থেকে কর্মচারীরা আজ সারাদিন পানি নিষ্কাশন করেছেন। বিকেল থেকে অঝোর ধারায় বৃষ্টি হওয়ায় ক্লাস রুমগুলোতে রাতে আবারো পানি ঢুকে পড়েছে।
অন্যদিকে বিদ্যমান ভবন গুলোতে শ্রেণি সংকট ও ক্লাসরুমের প্রতুলতার কারণে একাডেমিক কার্যক্রম চালু রাখা সম্ভব হচ্ছে না। নতুন একাডেমিক ভবন হলে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখা সম্ভব হতো।
গোমাতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শাহ আলম জানান, তার প্রতিষ্ঠানেও দুইদিন যাবত শ্রেণি কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।
সরেজমিন দেখা গেছে, সামান্য বৃষ্টিতেই ঈদগাঁও বাজারে প্রধান সড়ক ডিসি রোড সহ অন্যান্য অলিগলি ও জাগির পাড়া সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।
ঈদগাঁও জাগির পাড়া ও উত্তর মাইজ পাড়ার একাধিক ভূক্তভোগী জানান, অল্প বৃষ্টিতেই তাদের এলাকায় হাঁটুপানি জমে থাকে। এতে তাদের দৈনন্দিন জীবনে চরম দুর্দশা নেমে আসে। গৃহস্থালী কাজকর্ম ও শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতে বেশ দূর্ভোগের সৃষ্টি হয়।
ঈদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ অপেক্ষাকৃত নিচুস্থানে হওয়ায় সামান্য বৃষ্টি হলেই ডিসি রোড হয়ে পানি পরিষদ মাঠে ঢুকে পড়ে।
এতে পরিষদের দাপ্তরিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। পরিষদের কর্মচারী শামসুল আলম জানান, তিনি আজ সারাদিন পরিষদের বারান্দা থেকে পানি নিষ্কাশনের চেষ্টা করেছেন।