সাতটি মন্ত্রণালয় ও দপ্তরে ছয় হাজার ৪০৯টি নতুন পদ সৃষ্টি করছে সরকার। এসব পদ সৃষ্টির প্রস্তাব আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির বৈঠকে উঠতে যাচ্ছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। মন্ত্রিপরিষদের সচিব মাহবুব হোসেনের সভাপতিত্বে এই বৈঠক হবে।একই সঙ্গে ইউএনও-ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের কর্মচারী নিয়োগ বিধিমালা সংশোধন করা হচ্ছে।
সচিব কমিটির প্রস্তাবে বলা হয়েছে, নতুন পদ সৃষ্টির প্রস্তাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ বিভাগ সম্মতি দিয়েছে। সচিব কমিটির অনুমোদন পাওয়ার পর প্রস্তাবটি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে যাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদন পাওয়ার পরই সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।তবে অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, দপ্তর ও সংবিধিবদ্ধ সংস্থা এবং রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের গ্রেড-৩ ও তদূর্ধ্ব পদ ছাড়া অন্য সব পদ সৃষ্টিতে সচিব কমিটির অনুমোদনের পর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর অনুমোদন নিতে হবে।
নতুন সৃষ্ট ৬,৪০৯টি পদ
নতুন সৃষ্ট ছয় হাজার ৪০৯টি পদের মধ্যে নৌবাহিনীর নৌ সদরে ১৫টি, কারা অধিদপ্তরের অধীন মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের মহিলা কারারক্ষীর ৬০টি, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ছয়টি (ক্যাডার পদ), গাজীপুর, রংপুর ও বরিশাল মহানগর দায়রা জজ আদালতের জন্য ৮৪টি, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ১৫টি, হোমিওপ্যাথি বোর্ডের ৯টি, আটটি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ছয় হাজারটি, পল্লী উন্নয়ন একাডেমি রংপুরে ১১০টি, শেখ হাসিনা পল্লী উন্নয়ন একাডেমি জামালপুরে ১১০টি পদ রয়েছে। এর মধ্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের পুরো সাংগঠনিক কাঠামো হালনাগদ করা হবে। এ জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় শ্রম ও কর্মসংস্থানের ৫৮টি এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ৩৭টি পদ সৃষ্টির প্রস্তাব দিয়েছিল।তবে অর্থ বিভাগ দুই মন্ত্রণালয়ে মোট ২১টি পদের অনুমোদন দিয়েছে।
মাঠ প্রশাসনে নিয়োগ বিধিমালা সংশোধন হচ্ছে
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের কর্মচারী নিয়োগ বিধিমালা সংশোধন করছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ২০২২ সালের ২১ মার্চ মাঠ প্রশাসনের এসব কার্যালয়ের প্রায় ১৩ হাজার কর্মচারীর পদনাম পরিবর্তন হয়েছে। যেমন—১৩ গ্রেডের কর্মচারীদের পদনাম উপপ্রশাসনিক কর্মকর্তা, ১৪ গ্রেড সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ১৫ গ্রেড উপসহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা। এ জন্য নিয়োগবিধি সংশোধনের শর্ত দিয়েছিল অর্থ বিভাগ।পদনাম পরিবর্তনের প্রায় দেড় বছর পর নিয়োগ বিধিমালা সংশোধন করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারী সমিতির (বাকাসস) মহাসচিব এস এম রফিকুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, মাঠ প্রশাসনের কর্মচারীদের নিয়োগ বিধিমালা প্রায় দেড় বছর ধরে সংশোধন না হওয়ায় পদোন্নতিপ্রত্যাশী কর্মচারীরা বঞ্চিত হচ্ছেন। পুরনো বিধিমালা সংশোধন না হওয়ায় পদোন্নতিপ্রত্যাশীদের পদে নতুন নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এ জন্য নিয়োগ বিধিমালা দ্রুত পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
শিক্ষক-কর্মচারী আত্তীকরণ বিধিমালা হচ্ছে
দেশের প্রতিটি উপজেলায় অন্তত একটি স্কুল ও একটি কলেজ জাতীয়করণের লক্ষ্যে ২০১৬ সালে সম্মতিদান শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ পর্যন্ত ৩২৪টি কলেজকে জাতীয়করণের গেজেট জারি করা হয়েছে। প্রায় ৩৫০টি স্কুলকে জাতীয়করণের গেজেট জারি হয়েছে। তবে গত সাত বছরে প্রায় ১০০টি স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি সরকারি হয়েছে।
আত্তীকরণ জটিলতার কারণে বেশির ভাগ স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারী এখনো সরকারি হয়নি। স্কুল-কলেজ সরকারি হওয়ার পর এরই মধ্যে প্রায় সাত হাজার শিক্ষক-কর্মচারী অবসরে চলে গেছেন। অবশেষে সরকারীকৃত মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী আত্তীকরণ বিধিমালা-২০২৩ প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।