যুক্তরাষ্ট্রের হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে রাশিয়ায় গেছেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের জন্য তিনি দেশটিতে গেছেন। খবর রয়টার্সের।
গত মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) মার্কিন কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছিলেন, অস্ত্রচুক্তি সম্পর্কিত আলোচনার অগ্রগতি অর্জনে খুব দ্রুত একত্রিত হবেন কিম ও পুতিন। যদিও সম্ভাব্য এ বৈঠকের কোনো নির্দিষ্ট তারিখ বা অবস্থান জানাতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র।
সেদিন হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যে, উত্তর কোরিয়া যদি রাশিয়ার সঙ্গে অস্ত্র চুক্তি করে থাকে, তাহলে কিম জং উনকে চরম মূল্য দিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের এমন সতর্কতা উপেক্ষা করে বুলেটপ্রুফ ট্রেনে চেপে রাশিয়ায় গেলেন কিম জং উন।
গত রোববার ব্যক্তিগত বুলেটপ্রুফ ট্রেনে রাশিয়ার উদ্দেশে পিয়ংইয়ং ত্যাগ করেন কিম জং উন। তার সঙ্গে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সামরিক কর্মকর্তারাও আছেন। এছাড়া উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ অস্ত্রশিল্পের কর্মকর্তারাও তাঁর সঙ্গে আছেন বলে জানা গেছে।
জাপানের কিয়োডো নিউজ এজেন্সি মঙ্গলবার একটি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাশিয়ান সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, কিমকে বহনকারী একটি ট্রেন উত্তর কোরিয়া থেকে রাশিয়ার দূরপ্রাচ্যের প্রধান রেল গেটওয়ে খাসান স্টেশনে পৌঁছেছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, তারা বিশ্বাস করেন যে কিম মঙ্গলবার ভোরে রাশিয়ায় প্রবেশ করেছেন।
কিম ঘন ঘন বিদেশ ভ্রমণ করেন না। তার ১২ বছরের শাসনামলে তিনি মাত্র সাতবার বিদেশ ভ্রমণ করেছেন এবং দুইবার আন্তঃকোরিয়ান সীমান্ত অতিক্রম করেছেন। এর মধ্যে চারটি সফর ছিল উত্তর কোরিয়ার প্রধান রাজনৈতিক মিত্র চীনে।
কিমের রাশিয়া সফরের বিষয়ে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, এটি একটি পূর্ণাঙ্গ সফর হবে।
তিনি বলেন, দু’দেশের প্রতিনিধি দলের মধ্যে আলোচনা হবে। এরপর উভয় দেশের নেতারা একের পর এক বৈঠকে আলোচনা চালিয়ে যাবেন।
এদিকে খাসান প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা কিমের আগমনের খবরে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে মার্কিন কর্মকর্তারা প্রথমে বলেছিলেন যে কিম জং উনের এ সফর আসন্ন। তারা জানিয়েছেন, রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়ার মধ্যে অস্ত্র আলোচনা সক্রিয়ভাবে অগ্রসর হচ্ছে। কিম ও পুতিন সম্ভবত ইউক্রেনের যুদ্ধের জন্য রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ করার বিষয়ে আলোচনা করবেন।
রাশিয়ার বার্তা সংস্থা তাস বলেছে, পুতিন সোমবার ভ্লাদিভোস্টক পৌঁছেছেন। বুধবার পর্যন্ত চলা ইস্টার্ন ইকোনমিক ফোরামের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে তার।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র পেসকভ বলেছেন, ইস্টার্ন ইকোনমিক ফোরামের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনের পর কিমের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন পুতিন।
ওই বৈঠকের স্থান বা কিম অর্থনৈতিক ফোরামে যোগ দেবেন কিনা – সে বিষয়ে কোনো নিশ্চিয়তা পাওয়া যায়নি।
এদিকে পিয়ংইয়ং এবং মস্কো এ বিষয়টি অস্বীকার করেছে যে উত্তর কোরিয়ার সরকার রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ করবে। অথচ ১৮ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে রুশ সরকার তাদের অস্ত্রের বিশাল মজুত ব্যয় করেছে।
অপরদিকে সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলো রাশিয়া এবং পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশ উত্তর কোরিয়ার মধ্যে ঘনিষ্ঠ সামরিক সহযোগিতার বিভিন্ন ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সূত্র : রয়টার্স
পিডিএস/এমএইউ