আমিনুল কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:১২.১০.২৩ কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে অসুস্থ বাবা-মায়ের চিকিৎসার খরচ জোগাতে রিকশা চালাচ্ছেন সপ্তম শ্রেণীর পড়ুয়া এক ছাত্র, যে বয়সে লেখাপড়ার পাশাপাশি মাঠে গিয়ে খেলাধুলা করার কথা,সেই বয়সেই বাবা-মায়ের চিকিৎসা ও সংসারে হাল ধরতে রিকশা চালাচ্ছেন শিমুলবাড়ি ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণীতে পড়ুয়া আমিনুল ইসলাম। আমিনুল ইসলামের বাড়ি ফুলবাড়ী উপজেলার ফুলবাড়ী ইউনিয়নে চন্দ্রখানা গ্রামের কুড়ারপাড় এলাকায়। চার শতাংশ জমির উপর জরাজীর্ণ একটি বাড়িতে থাকে আমিনুলের পরিবার।আমিনুল ইসলামের বাবা আব্দুল করিম মিয়া(৫৩) প্রায় ১ বছর আগে স্টক করে হাত পা অবশ হয়ে গেছে ভালো করে কথা বলতে না পারলেও কোনভাবে লাঠির উপর ভর দিয়ে চলাফেরা করেন। মা কবিজন বেগম(৪৫) প্রায় ৭/৮ বছর থেকে টিউমার রোগে আক্রান্ত। টাকা পয়সার অভাবেই সঠিক চিকিৎসা করতে পারছেন না তারা, বয়স কম হওয়ায় অনেকেই আমিনুলের রিকশায় সহানুভূতি দেখিয়ে উঠলেও উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় সারাদিন রিকশা চালিয়ে যে দুই তিনশো টাকা আয় করে তা দিয়ে বাবা-মায়ের ওষুধের টাকা জোগাড় হলেও মাঝে মাঝে খাবার কেনার টাকা থাকে না আমিনুলের। তাই সরকার ও সমাজের বৃত্তবান দানশীল ব্যক্তির কাছে বাবা-মায়ের চিকিৎসার জন্য সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন শিক্ষার্থী আমিনুল । এলাকাবাসী জহুর আলী, জরিনা বেগম জানান, পরিবারটি খুব অসহায় অনেক কষ্ট করে চলে। সংসারে আয় উপার্জন করার কোন ব্যক্তি না থাকায় শিশু আমিনুল রিকশা চালিয়ে পরিবারটি চালাচ্ছে ও তার বাবা-মায়ের চিকিৎসা করছে। আমিনুলের মা কবিজন বেগম জানান,আমরা দুই স্বামী-স্ত্রী খুবই অসুস্থ ও অসহায়,আমার এক ছেলে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে ঢাকায় গিয়ে কামাই করে নিজের পেট চালায়। আমাদের কোন সহায়তা করতে পারে না। ছোট্ট ছেলে আমিনুল লেখাপড়ার পাশাপাশি রিকশা চালিয়ে আমাদের চিকিৎসার খরচ চালায়। সরকারি কোনো সহযোগিতা পেলে আমাদের চিকিৎসাটা ভালো হতো আমার স্বাভাবিক জীবনে হয়তো ফিরে আসতে পারতাম। আমিনুলের রিকশার নিয়মিত যাত্রী নয়ন ও আজিজ জানান, আমিনুলের বাবা-মা খুব অসুস্থ তাই সহানুভূতি করে আমরা ও রিকশায় উঠি। আমিনুল ইসলাম জানান বাড়িতে খুব অভাব মা বাবা খুব অসুস্থ তাই বাধ্য হয়ে বাবা মার চিকিৎসার লেখাপড়ার পাশাপাশি রিকশা চালাই। বাবা-মায়ের চিকিৎসার জন্য দানশীল ব্যক্তি ও সরকার সহযোগিতা করলে লেখাপড়াটা ভালো করে চালাতে পারতাম। ফুলবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন অর-রশিদ হারুন জানান , আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখেছি পরিবারটি খুবই অসহায়, বাবা মায়ের চিকিৎসার জন্য আমিনুল নামের ছেলেটি লেখাপড়া বাদ দিয়েই রিকশা চালাচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রায়হানুল ইসলামের জানান, পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন দিলে সমাজসেবা অধিদপ্তর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ব্যবস্থা নেবে ।