সোহেল তানভীর, স্টাফ রিপোর্টার: ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালন্দর কচুবাড়ী কৃষ্ণপুর গ্রামে আব্দুল্লাহ আল রাউফ ওরফে পুস্প (৬) এর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় হত্যাকান্ডের অভিযোগে ৮ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার (৬ ডিসেম্বর) মৃত আব্দুল্লাহের মা রুনা আক্তার (২৫) ঠাকুরগাঁও সদর থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় তার প্রাক্তন স্বামী মাসুদ রানা সহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। মামলায় বলা হয় আব্দুল্লাহের মরদেহ পুকুরের পানি থেকে উদ্ধার করা হলেও আসামীগণ তাকে হত্যা করে পানিতে ফেলে দিয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, মামলার বাদিনী ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রায়পুর ইউপির কাচনা (রত্নই হারপাড়া) গ্রামের উসমান আলীর মেয়ে রুনা আক্তারের ২০১৬ সালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালন্দর কচুবাড়ী কৃষ্ণপুর গ্রামের মতিবুর রহমানের ছেলে মো: মাসুদ রানার বিয়ে হয়। তাদের ঘরে আব্দুল্লাহ আল রাউফ ওরফে পুস্প’র জন্ম হয়। বিয়ের পর তাদের সংসারে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঝামেলার সৃষ্টি হলে শালিস-বৈঠকের মাধ্যমে উভয়ের মধ্যে তালাক প্রদানের মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ছিন্ন করা হয়।
সেখানে সিদ্ধান্ত হয় যে আব্দুল্লাহ তার মা রুনা আক্তারের নিকট থাকবে এবং আব্দুল্লাহের ভরন-পোষনের জন্য প্রতি মাসে তার বাবা মাসুদ রানা ৩ হাজার টাকা প্রদান করবেন। আব্দুল্লাহ তার মায়ের কাছে তার নানীর বাড়িতে থাকাকালে গত শনিবার মাসুদ রানার বাড়ির লোকজন কৌশলে মেহমান খাওয়ার কথা বলে আব্দুল্লাহকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। পরদিন রুনা আক্তার আব্দুল্লাহকে আনতে গেলে মাসুদ রানার বাড়ির লোকজন তাকে গালিগালাজ করে আব্দুল্লাহকে না দিয়ে তাড়িয়ে দিলে তিনি সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, গত ৫ ডিসেম্বর মঙ্গলবার মামলার আসামী মো: মতিবুর রহমান আব্দুল্লাহর নানাকে মোবাইল ফোনে সংবাদ দেয় যে, আব্দুল্লাহের মরদেহ তার পিতা মাসুদ রানার বাড়ির ৫০ গজ দুরের একটি পুকুরের পানিতে ভাসছে। খবর পেয়ে রুনা আক্তার ঘটনাস্থলে পৌছালে আব্দুল্লাহের শরীরের বিভিন্ন স্থানে কাদামাটি লাগানো, নাকের নিচ দিয়ে রক্ত পরা এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোলা জখম দেখতে পান। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরন করে। আব্দুল্লাহকে তার পিতা, সৎ মা সহ অন্যান্য আসামীরা শ্বাসরোধ করে কিংবা মারপিট করে হত্যা করতে পারে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
মামলায় আসামীরা হলেন- আব্দুল্লাহের বাবা মাসুদ রানা, সৎ মা বিলকিস, মো: মতিবুর রহমান (৫০), নিজাম (৪৮), নেহার বেগম (৪০), পান্না আক্তার (২৪), মুক্তা আক্তার (২৩) ও জাহাঙ্গীর (৪৮) সহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি ফিরোজ কবির মুঠোফোনে জানান, ঐ ঘটনায় ওরা মামলা করেছে, আমি পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।