স্টাফ রিপোর্টার : আজহারুল ইসলাম সাকী॥ বর্তমান শীত ঋতু চলছে এই সময় সবজির মৌসুম হিসেবে পরিচিত। অনেক আগেই বাজারে শীতের সবজি উঠতে শুরু করেছে। বাজার সব শীতকালীন সবজিতে ভরপুর। কিন্তু বাস্তবতা হলো ভরা মৌসুমে শীতের সবজির হঠাৎ মুল্য বৃদ্ধির কারনে ক্রেতা সাধারন বেকায়দায় পড়েছে এবং সবজি ক্রয়ে বিরক্ত ও বিব্রত হচ্ছে। সপ্তাহ পুর্বে ও বিভিন্ন ধরনের সবজির মুল্য ছিল স্বাভাবিক অর্থাৎ শীত মৌসুমে যেমন মূল্য থাকার কথা তেমনই ছিল। কয়েকদিন আগে ফুলকপির কেজি ছিল ত্রিশ টাকা মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে ফুলকপি কেজি প্রতি হচ্ছে পঞ্চাশ থেকে পশ্চান্ন টাকা সপ্তাহ যেতে না যেতেই পনের থেকে বিশ টাকা কেজি প্রতি বৃদ্ধি পেয়েছে সবজির মূল্য। এই চিত্র সাতক্ষীরার শহরের বড় বাজার হতে শুরু করে উপজেলা ভিত্তিক হাটবাজার গুলোর। রাজধানী ঢাকাতে সবজির মুল্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে হরতাল অবরোধের কারনে পরিবহন খরচের বিষয়টি থাকলে সাতক্ষীরার হাটবাজার গুলোতে হঠাৎ করে সবজির মুল্য বৃদ্ধির কারন জানা যাচ্ছে না। তবে কোন কোন সবজি বিক্রেতার বক্তব্য দশ পনের দিন পুর্বে বৃষ্টিপাতের কারনে সবজি উৎপাদনে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় বাজার চড়া। কিন্তু সবজি উৎপাদনকারী এবং ভোক্তা সাধারন বৃষ্টিপাতের বিষয়টি আসতেনারাজ কারন যে বৃষ্টিপাত নামে তা ছিল যৎসামান্য অর্থাৎ সবজি বাগানের জন্য ক্ষতি ছিল না। সাতক্ষীরা জেলা বরাবরই শষ্য ভান্ডার ও সবজি উৎপাদনকারী জেলা হিসেবে পরিচিত আর বর্তমান মৌসুমে জেলায় ব্যাপক পরিমান সবজির উৎপাদন হয়েছে। অন্যান্য বছর অপেক্ষা বর্তমান শীত মৌসুমে জেলার শত সহস্র বিঘা চিংড়ী ঘেরের ভেড়িবাঁধে হরেক প্রজাতির সবজি উৎপাদন হওয়ায় সঙ্গত কারনে আশার সহ্চার ঘটেছিল যে সবজির বাজার অপেক্ষাকৃত কম থাকবে। সাতক্ষীরার বিভিন্ন হাটবাজার ঘুরে দেখা গেছে সবজি বাজারের মূল্য বৃদ্ধির পাগলা ঘোড়া ছুটেই চলেছে।বড় বাজারে সবজি ক্রয় করতে আসা জাকির হোসেন জানান সারা বছর সবজি পাওয়া যায় কিছু মুল্য থাকে চড়া, শীতকালে সবজির ব্যাপক উপস্থিতি থাকে এবং মুল্য ও সহনীয় কিন্তু বর্তমানের চিত্র ভিন্ন মুল্য চড়া। শীত মৌসুমের শুরুতেই সিম, ওলকপি, ফুল কপি, বাঁধা কপি, উঠতে শুরু করে প্রাথমিক পর্যায়ে আকাশ ছোয়া মুল্য থাকলেও মধ্যবর্তী সময়ে মুল্য সহনীয় পর্যায়ে এসে পৌছায় কিন্তু বর্তমানে বাজারে সিম কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে চল্লিশ/পয়তাল্লিশ টাকায়, ওলকিপ চল্লিশ টাকা, বাধা কপি চল্লিশ/পয়তাল্লিশ, ফুলকপি কেজি প্রতি পঞ্চাশ হতে পঞ্চান্ন টাকা, পটল পঞ্চশ টাকা, বেগুন ষাট টাকা হতে পঞ্চশ টাকা, টমেটো পঞ্চাশ থেকে ষাট টাকা, লাল শাক কেজি প্রতি চল্লিশ টাকা, মাঝারী সাইজের লাউ ত্রিশটাকা, বাজারে কাচ কলার মুল্য কিছুটা কম কেজি প্রতি পঁচিশ/ত্রিশটাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ইতিমধ্যে নতুন আলু উঠতে শুরু করে সাতক্ষীরার হাটবাজারে নতুন গোল আলু কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে পয়ষট্টি টাকায়, পুরাতন আলু পঞ্চাশ থেকে পঞ্চান্ন টাকায়। সারা বছর পাওয়া যায় সবজির ও মুল্য বেড়েছে ঢেড়শ, ঝিঙে, কুচরমুখি, বরবটি, পেপে, মিষ্টি কুমড়ার মূল্য ও বৃদ্ধি পেয়েছে। শীত মৌসুমে খিরার মুল্য স্বাভাবিক থাকলে সাতক্ষীরার হাট বাজার গুলোতে প্রতি কেজি খিরা বিক্রয় হচ্ছে কেজি প্রতি চল্লিশ টাকায়। পেয়াজের মুল্য কমতে শুরু করলেও এখনও স্বাভাবিক পর্যায়ে আসেনি, সাতক্ষীরার হাটবাজার গুলোতে প্রতি কেজি পিয়াজ বিক্রি হেচ্ছ একশত টাকায় অবশ্য কোন কোন বাজারে নতুন এবং দেশী পেয়াজ একশত টাকার নিচে বিক্রি হচ্ছে। ডিম, মুরগি ও মাংসের বাজারের খবরও ক্রেতাদের অনুকুলে নয়। প্রান্তীক পর্যায়ে খোজ নিয়ে জানাগেছে বাজারে যে ভাবে সবজির মুল্র বেড়েছে উৎপাদনকারী কৃষক তার শতভাগ সুফল পাচ্ছে না, এক সবজি অন্তত তিন/চার হাত বদল হয়ে ভোক্তা পর্যায়ে পৌছায় যে কারনে মধ্যস্বত্বভোগীরা বিশেষ ভাবে লাভবান হচ্ছে এবং ক্রেতাদের অধিক মূল্যে সবজি ক্রয় করতে হচ্ছে। সাতক্ষীরার সবজি বাজারে তদারকির বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন কর্তৃপক্ষ বাজার মনিটরিং এর মাধ্যমে স্থিতিশীল করতে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে।