মোঃ ওসমান গনি ইলি, কক্সবাজারঃ কক্সবাজারের-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) জাফর আলম ও তাঁর বাহিনীর বিরুদ্ধে ভূমিদস্যুতার অভিযোগ তুলে মানববন্ধন করেছেন দুই শতাধিক নারী-পুরুষ।
চকরিয়া উপজেলা সদরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে এমপি জাফর আলম ও তাঁর বাহিনীর বিরুদ্ধে জায়গাজমি ও চিংড়িঘের জবরদখলসহ নানা অত্যাচার-নির্যাতনের অভিযোগ তুলে ধরেন ভুক্তভোগীরা।
শুক্রবার মানববন্ধনে অংশ নেওয়া চকরিয়া উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক মামুনুল করিম বলেন, ‘আমার মালিকানাধীন রামপুর মৌজার একটি চিংড়িঘের জাফর আলম এমপি হওয়ার পরপরই তাঁর ভাইপো জিয়াবুল, ভাগ্নে মিজান জামাল চেয়ারম্যানের বাহিনী দিয়ে জবরদখল করে নেন। চিংড়িঘের ফেরত দেওয়ার কথা বলে নগদ ২২ লাখ টাকা চাঁদা নেওয়ার পরও আমাকে ঘের ফেরত দেননি তিনি।
এই যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে আমি স্ট্রোক করে বর্তমানে প্যারালাইজড অবস্থায় জীবন যাপন করছি।’উপজেলার বিএমচর এলাকার মাস্টার আবু হানিফ বলেন, ‘দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময় আগে প্রতিষ্ঠিত অনুশীলন একাডেমি এমপি জাফর আলম জোরপূর্বক বন্ধ করে দেন। পরে অনুসারীদের দিয়ে একই নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠান খোলেন তিনি।’
এমপি জাফর আলমের বাড়ির পাশের ইমাম উদ্দিন পাড়ার জসিম উদ্দিনের স্ত্রী খুরশিদা বেগম বলেন, ‘জাফর আলমের নির্দেশে স্থানীয় ভূমিদস্যু রফিক ও আমিন গং আমাদের পৈতৃক জমিতে নির্মাণ করা দোকানঘর জবরদখল করে নিয়েছে।’
বিএমচর ইউনিয়ন কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর মেম্বার বলেন, ‘এমপি জাফর আলমের নির্দেশে বিএমচর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বদিউল আলম পুরো এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন।এলাকার একাধিক মানুষের ঘরবাড়ি জবরদখলসহ দীর্ঘদিনের ভোগদখলীয় জমি থেকে উচ্ছেদ করে তাঁদের পথে বসিয়েছেন তিনি।
এদিকে ভূমিদস্যুতাসহ নানা অভিযোগের বিষয়ে এমপি জাফর আলম বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ইন্ধনে ভাড়াটিয়া লোকজন দিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে এসব অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। মূলত আমি গরিবের ভাগ্য উন্নয়নের জন্যই রাজনীতি করি। আমি আশাবাদী, আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে বিজয়ী হব।
এবারের নির্বাচনে আসনটিতে মনোনয়নপত্র দাখিলের পর ঋণখেলাপি হওয়ার কারণে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সালাউদ্দিন আহমেদ অযোগ্য হয়ে গেছেন। বর্তমানে এমপি জাফর আলমের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নির্বাচনে লড়ছেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম। কক্সবাজার-১ আসনের এই সংসদ সদস্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন। তাঁর ছেলে তানভীর আহমদ সিদ্দিকী তুহিনও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে আছেন।