লিপন খান , কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জ থেকে মাদ্রাসাছাত্র মো. নিদারুল ইসলাম লাবিব (১৩) কে অপহরণের ২৮ দিন পর উদ্ধার করেছে র্যাব। সেই সঙ্গে অপহরণ চক্রের মূলহোতাসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
গ্রেপ্তারকৃত দুজন হলো বান্দরবান জেলার আলীকদম থানার নয়াপাড়া গ্রামের মো. আব্দুল্লাহ (২৬)। তিনি অপহরণ চক্রের মূলহোতা বলে দাবি করেছে র্যাব। অন্যজন কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানার নেওয়া গ্রামের মো. রাসেল (২৫)।
রোববার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে র্যাব-১৪ সিপিসি-২ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক মো. আশরাফুল কবির প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
আশরাফুল কবির বলেন, নিদারুল ইসলাম লাবিব ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার ডাংরা গ্রামের প্রবাসী নজরুল ইসলাম লিটনের ছেলে। পড়াশোনার জন্য লাবিব ও তাদের পরিবারের অন্য সদস্যরা কিশোরগঞ্জ শহরের রথখলা এলাকায় বসবাস করে। সে নগুয়া এলাকার হেফজুল আরকাম হাফিজিয়া মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের শিক্ষার্থী।
অপহরণের দিন গত বছরের ২২ ডিসেম্বর বিকেলে মাদ্রাসায় যাওয়ার উদ্দেশে বাসা থেকে বের হয়। রাতে মাদ্রাসায় না যাওয়ায় মাদ্রাসার শিক্ষক লাবিবের মা লুৎফা বেগমকে বিষয়টি জানান। পরে বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনের বাসা ও সম্ভাব্য স্থানে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে অপহরণের মামলা দায়ের করেন মা। বিষয়টি র্যাবকে জানালে তারা গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে।
তিনি আরও জানান, অপহরণের পর লাবিবের মায়ের কাছে অপহরণকারীরা মুক্তিপণ হিসেবে আট লাখ টাকা দাবি করেন। তারা লাবিবকে নিয়ে চট্টগ্রাম, ঢাকা, ভৈরব ও সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন করেন। আর এ কারণে তাদের সঠিক অবস্থান নিশ্চিত করা যাচ্ছিল না। অপরদিকে ভুক্তভোগীর পরিবারের কাছে মুক্তিপণের টাকা না দিলে হত্যা করা হবে বলে ভয় দেখাতে থাকেন তারা। এ সময় নিরুপায় হয়ে লাবিবের পরিবার মুক্তিপণ হিসেবে গত ২০ জানুয়ারি মোবাইল ব্যাংকিয়ের মাধ্যমে অপহরণকারীদের কাছে ২৮ হাজার টাকা পাঠায়। এরই সূত্রধরে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে কিশোরগঞ্জ র্যাব-১৪ ও র্যাব-৯ এর যৌথ অভিযানে শনিবার (২০ জানুয়ারি) রাতে সিলেট জেলার দক্ষিণসুরমা থানার ভার্সখোলা এলাকা থেকে অপহরণকারীদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় মাদ্রাসাছাত্র লাবিবকেও উদ্ধার করে।
এ ছাড়া অভিযুক্তদের কাছ থেকে লাবিবের মুক্তিপণের ২৪ হাজার ৫০০ টাকা, দুটি মোবাইল ফোনসহ পাঁচটি সিম উদ্ধার করা হয়। তাদের কিশোরগঞ্জ মডেল থানার মাধ্যমে আদালতে পাঠানো হয়েছে।