কানাইঘাট প্রতিনিধিঃ কানাইঘাট উপজেলার দক্ষিণ অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ ঝিঙ্গাবাড়ী স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুস সালাম কতর্ৃক বিধি বর্হিভূত ভাবে গভর্ণিং বডির কমিটি গঠনের চেষ্টা সহ নানা ধরনের স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে এলাকার সচেতন মহল এবং বিদ্যালয়ের অভিভাবকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ঝিঙ্গাবাড়ী স্কুল এন্ড কলেজের গভর্ণিং বডির অভিভাবক পদের নির্বাচন এর জন্য গত ১১ ফেব্রুয়ারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও প্রিজাইডিং অফিসার আগামী ৪ মার্চে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। কিন্তু বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও এলাকার সচেতন মহল জানিয়েছেন, বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ আব্দুস সালাম তার পছন্দের লোকজনদের নিয়ে স্কুল এন্ড কলেজের গভর্ণিং বডি গঠণের জন্য তফসিল ঘোষণার আগেরদিন ১০ ফেব্রুয়ারী কিছু অভিভাবক বিদ্যালয়ে ডেকে এনে সাধারণ সভার আয়োজন করে তার ইচ্ছামতো রেজুলেশন খাতায় তাদের স্বাক্ষর নিয়ে গভর্ণিং বডির কমিটি গঠন করেন। এমন সংবাদ অভিভাবক ও সচেতন মহলের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে অধ্যক্ষ আব্দুস সালামের এমন স্বেচ্ছাচারিতার ঘটনায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তফসিল অনুযায়ী গভর্ণিং বডির বিদ্যালয়ের নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভাবে সম্পন্ন করার জন্য অভিভাবকদের পক্ষ থেকে রশিদ আহমদ চৌধুরী, শওকত হোসেন, মোঃ ফয়ছল চৌধুরী লিখিভভাবে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বরাবরে গত ১৩ ফেব্রুয়ারী দরখাস্ত দায়ের করেন। দরখাস্ত দায়েরের পর অধ্যক্ষ আব্দুস সালাম এলাকার লোকজন, অভিভাবকদের দাবীর প্রেক্ষিতে এবং এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে লেখালেখি করার পর প্রতিবাদ ও তোপের মুখে পড়ে, গর্ভণিং বডির পকেট কমিটি করেননি বলে অস্বীকার করতে বাধ্য হন। আগামী ৪ মার্চ তফসিল অনুযায়ী স্কুল ও কলেজে এর অভিভাবক সদস্য, সংরক্ষত মহিলা অভিভাবক পদ, সাধারণ মহিলা অভিভাবক ও দাতা দস্যদের নির্বাচন সুষ্ঠ ভাবে সম্পন্ন করার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও সচেতন মহল।
দরখাস্তকারী রশিদ আহমদ চৌধুরী, শওকত হোসেন, মোঃ ফয়ছল চৌধুরী সহ আরো অনেক অভিভাবক জানিয়েছেন, বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ আব্দুস সালামের সেচ্ছাচারিতার কারনে ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঝিঙ্গাবাড়ী স্কুল এন্ড কলেজের ভাবমূুর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। এমতাবস্থায় প্রতিষ্ঠানের সুনাম রক্ষা সহ শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে গভর্ণিং বডির নির্বাচন তফসিল অনুযায়ী সম্পন্ন করার জন্য তারা দাবী জানান। তাদের অভিযোগ এমপিও ভুক্ত বেতন-ভাতা পাওয়ার পর অধ্যক্ষ আব্দুস সালাম বিধি বহির্ভূত ভাবে দীর্ঘদিন থেকে বিদ্যালয়ের স্কুল শাখা থেকে ৬৫৬৮ এবং কলেজ শাখা থেকে ৬,৯৭৫ টাকা এবং স্কুল ও কলেজ শাখা থেকে পৃথক পৃথক দুটি ঈদ বোনাস সহ প্রতি মাসের মোবাইল বলি এক হাজার টাকা করে নিচ্ছেন। বিগত ২৫ নভেম্বর ২০২৩ইং তারিখে ঝিঙ্গাবাড়ী ইচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের গভর্ণিং বডির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অধক্ষ্য আব্দুস সালাম স্কুল-অথবা কলেজ শাখার যেকোন একটি বেতন ও একটি উৎসব ভাতা নেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কিন্তু অধ্যক্ষ সেই রেজুলেশনটি কলম দিয়ে কেটে ফেলে পূর্বের ন্যায় দুথটি শাখা থেকে বেতন ভাতা নিচ্ছেন। এ ব্যাপারে গত শনিবার বিদ্যালয়ে গিয়ে অধ্যক্ষ আব্দুস সালামের সাথে কথা হলে তিনি স্কুল ও কলেজ গভর্ণিং বডির নির্বাচন তফসিল অনুযায়ী ৪ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে।
এ নিয়ে এলাকার লোকজন তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এমপিও ভুক্তির বেতন-ভাতা পাওয়ার পরও স্কুল ও কলেজ শাখা থেকে বেতন ও উৎসব ভাতা নেয়ার বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিধি অনুযায়ী বেতন নিচ্ছেন এবং গভর্ণিং বডির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রেজুরেশন কলম দিয়ে কেটে ফেলার বিষয় তিনি বলেন, তিনি নিজে কেটে ফেলেননি, একজন অভিভাবক সদস্য তা কেটেছেন।