মোঃ কামাল হোসেন খাঁন,মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধিঃ মেহেরপুরে লক্ষ্যমাত্রার অধিক জমিতে গম চাষ করা হয়েছে। অতিবৃষ্টি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় মেহেরপুরের কৃষকরা এবার গম চাষে সাফল্য অর্জন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
বিগত কয়েক বছরে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে কৃষকরা গম চাষে নিরুৎসাহিত হলেও আশানুরূপ ফলন হওয়ায় এবারও পর্যাপ্ত পরিমাণ জমিতে গমের আবাদ করেছেন।
মেহেরপুরের কৃষকরা ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে বীজ বপন করে। কারণ এ সময়টা বীজ বপণের উপযোগী সময়। বীজ বপনের বিভিন্ন কৌশল থাকলেও মেহেরপুর জেলার কৃষকরা ছিটিয়ে বীজ বপন করে থাকে। ইতিমধ্যে সকল প্রকার সারসহ তৃতীয় সেচ সম্পন্ন করেছেন কৃষকরা। সমসাময়িক রোগবালাই দমনে বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক ব্যবহার করছেন, যা এখনও অব্যাহত রয়েছে। তবে চলতি মৌসুমে রোগবালাই তেমন একটা নেই বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
ষোলটাকা গ্রামের কৃষক মিঠুন জানান, প্রতি বিঘা জমিতে গমের আবাদের শুরু থেকে ঘরে তোলা পর্যন্ত প্রায় ১২-১৫ হাজার টাকার প্রয়োজন হবে। পৌষ মাসের শুরুতে বীজ বপন করে ফাল্গুন মাসে ফসল ঘরে তুলবেন।
মাইলমারী গ্রামের কৃষক আব্দুর রশিদ বলেন, প্রতি বিঘা জমিতে বীজ বপনে প্রায় ২২ থেকে ২৫ কেজি বীজের প্রয়োজন হয়। হালচাষ, বীজ, সেচ, সার, কীটনাশক, আগাছা দমন, কর্তন, পরিবহন ও মাড়াইসহ প্রায় ১২ হাজার টাকার প্রয়োজন পড়ে। প্রতি বিঘা জমির ফসলে ১৩ থেকে ২০ মণ পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। এবছরে তিনি ৩ বিঘা জমিতে গমের আবাদ করেছেন।
জুগিন্দা গ্রামের আরফুজ ইসলাম জানান, বারী-৩০, ৩২ ও ৩৩ জাতসহ বিভিন্ন জাতের বীজ বপন করেছেন গ্রামের কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলন হবে বলে আশাবাদী।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার জানান, মেহেরপুরে তাপ ও খরা সহিষ্ণু জমি, যা গম চাষের জন্য উপযোগী। জেলায় এবার গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১০ হাজার হেক্টর জমিতে। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে চাষ হয়েছে ১৩ হাজার ৬৫ হেক্টর জমিতে।
একই সময়ে গত মৌসুমে জেলার সদর, গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলায় চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় প্রায় ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে।
মৌসুমে গম চাষ সফল করতে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তারা। বর্তমান কৃষি বান্ধব সরকার কৃষকদের উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করায় জেলায় কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে জেলার কৃষকরা তাদের কাঙ্খিত ফলন পাবেন।