রানা খান,শ্রীপুর,গাজীপুর প্রতিনিধিঃ গাজীপুর শ্রীপুরে আজিদা বেগম(৩৮)কে নির্মমভাবে গলাকেটে হত্যা ঘটনার প্রধান আসামী ও তার সহযোগী আসামীকে কুমিল্লা ও গাজীপুর থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১ এবং র্যাব-১১। বিষয়টি নিশ্চিত করেন, র্যাব১ কোম্পানি কমান্ডার জুন্নুরাইন বিন আলম। গ্রেফতারকৃতরা হলেন ইদ্রিস মিয়া(৫৫) পিতা-মৃত ইব্রাহিম, থানা-পূর্বধলা, নেত্রকোণা, রহমত আলী(৫৫)পিতা-মোঃ আরশ আলী, থানা-সদর, জেলা-নেত্রকোণা।র্যাব১ কোম্পানি কমান্ডার জুন্নুরাইন বিন আলম জানান, শ্রীপুর থানাধীন নগরহাওলা সাকিনস্থ জনৈক বাবুল এর ভাড়া বাড়ী পূর্ব দুয়ারী টিনের ঘরের পশ্চিমের বারান্দার রুমের ভিতর হতে ভিকটিম আজিদা বেগম(৩৮)পিতা-রুমালী মিয়া, সাং-হাইলাট্টি, থানা-কলমাকান্দা, জেলা-নেত্রকোণা, এ/পি সাং-নগরহাওলা, (জনৈক বাবুল এর বাড়ীর ভাড়াটিয়া) থানা-শ্রীপুর, জেলা-গাজীপুরের গলাকাটা মৃতদেহ উদ্ধার করে। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দিন আহম্মেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, গাজীপুরে প্রেরণ করেন। উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের ছোট ভাই মোস্তফা(৩৫) পিতা-রুমালী মিয়া, সাং-হাইলাট্টি, থানা-কলমাকান্দা, জেলা-নেত্রকোণা, বাদী হয়ে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানায় একটি অজ্ঞাতনামা হত্যা মামলা দায়ের করেন। যাহা গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানার মামলা নং-২৭/১৭০, ধারাঃ ৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়। এই ঘটনাটি বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয় এবং এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত আসামীদেরকে গ্রেফতারের জন্য র্যাব-১, স্পেশালাইজড কোম্পানী পোড়াবাড়ি ক্যাম্প, গাজীপুর এর চৌকস আভিযানিক দল বিষয়টি আমলে নিয়ে ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং আসামীদেরকে গ্রেফতারের জন্য গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
তিনি আরও জানান, র্যাব-১, সিপিএসসি, গাজীপুর এবং র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লা এর একটি আভিযানিক দল তথ্য প্রযুক্তি ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে, ওই মামলার প্রধান আসামী মোঃ ইদ্রিস মিয়া(৫৫) পিতা-মৃত মোঃ ইব্রাহিম, স্থায়ীঃ সাং-উনমান্দি, থানা-পূর্বধলা, জেলা-নেত্রকোণা, এ/পি সাং-নগরহাওলা(জনৈক বাবুল এর বাড়ীর ভাড়াটিয়া), থানা-শ্রীপুর, জেলা-গাজীপুর, কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী থানাধীন বলেশ্বর এলাকায় আত্মগোপনে আছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১, সিপিএসসি, গাজীপুর এবং র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লা এর আভিযানিক দল কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী থানাধীন বলেশ্বর এলাকায় যৌথ অভিযান পরিচালনা করে সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্সের সহায়তায় উল্লেখিত মামলার ঘটনার সাথে জড়িত প্রধান আসামী মোঃ ইদ্রিস মিয়া(৫৫)’কে কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী থানাধীন বলেশ্বর এলাকা হতে অদ্য (২২ এপ্রিল ) সকালে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে আসামী মোঃ ইদ্রিস মিয়া(৫৫)’কে জিজ্ঞাসাবাদে তাহার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দুপুর আনুমানিক ১২.৩০ ঘটিকার সময় গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর থানাধীন রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অন্যতম সহযোগী আসামী মোঃ রহমত আলী(৫৫)পিতা-মোঃ আরশ আলী, সাং-জামাদি, পোঃ-সুজুয়ানাম, থানা-সদর, জেলা-নেত্রকোণা, এ/পি সাং-জৈনাবাজার হতে দক্ষিণে বাবুর মোড়(লালু মিয়া বাসার ভাড়াটিয়া), থানা-শ্রীপুর, জেলা-গাজীপুর’কে গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর থানাধীন রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তা সাকিনস্থ জনৈক আজাহার এর চায়ের দোকানের সামনে হতে অদ্য গ্রেফতার করে। আসামীদ্বয় উক্ত হত্যাকান্ডের লোমহর্ষক বিবরণ দেন।
বিগত ০৮(আট) বছর আগে ধৃত আসামী মোঃ ইদ্রিস মিয়া(৫৫) এবং ভিকটিম আজিদা বেগম(৩৮)দ্বয়ের মাঝে দ্বিতীয় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিবাহের পর থেকেই তাদের মাঝে পারিবারিক ও দাম্পত্য কলহের জের ধরে প্রতিনিয়ত ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত হতো। তাদের মাঝে দাম্পত্য কলহের অবনতি হলে ধৃত আসামী মোঃ ইদ্রিস মিয়া(৫৫)’র মনে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এরই প্রেক্ষিতে আসামী মোঃ ইদ্রিস মিয়া(৫৫) ভিকটিমকে হত্যার পরিকল্পনা করে। উক্ত পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং তারিখ রাত আনুমানিক ১১.৩০-১২.৩০ ঘটিকার সময় ধৃত প্রধান আসামী মোঃ ইদ্রিস মিয়া(৫৫) এবং তার অন্যতম সহযোগী আসামী মোঃ রহমত আলী(৫৪) ভিকটিম আজিদা বেগম(৩৮)’কে ঘুমন্ত অবস্থায় তার বর্তমান ঠিকানা গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানাধীন নগরহাওলা সাকিনস্থ জনৈক বাবুল এর ভাড়া বাড়ী পূর্ব দুয়ারী টিনের ঘরের ভিতর ঢুকে প্রধান আসামী মোঃ ইদ্রিস মিয়া(৫৫) ভিকটিমের ঘরে থাকা ছুরি দিয়ে ভিকটিমকে নির্মমভাবে জবাই করে এবং ধৃত সহযোগী আসামী ভিকটিমের মুখে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা নিশ্চিত করে ঘরের দরজায় তালা দিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে, উক্ত হত্যাকান্ডের সহিত আসামীদ্বয় জড়িত ছিল মর্মে স্বীকার করে।গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে