রানা খান,শ্রীপুর,গাজীপুর প্রতিনিধিঃ গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মুলাইদ গ্রামের একটি বহুতল ভবনের ফ্ল্যাট থেকে ইসরাফিল (১৮) ও রোকেয়া(১৭) নামের স্বামী-স্ত্রীর লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ।
লাশের পাশেই একটি চিরকুট ছিল। তাতে লেখা ছিলঃ
, “মা-বাবা আমাকে মাফ করে দিও, আমি তোমাদের সাথে থাকতে পারলাম না। আমার জান আমার জন্য ফাঁসিতে ঝুলেছে। তাই আমি থাকতে পারলাম না। আমি কাউকে দোষারোপ করি না। কারও কোনো দোষ নাই। আমার জান আমার জন্য অপেক্ষা করতাছে। সবাই ভালো থাকবা। মো. ইসরাফিল। মা আমার পাশে রোকেয়ার কবর দিও মা। মা আমি জানি না আমার জান কেন ফাঁস দিল। তার জন্য সম্পন্ন আমি দায়ী। এতে কারও কোনো দোষ নাই”.।
মরদেহের পাশে পড়ে থাকা চিরকুট দেখে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি একটি আত্মহত্যা।
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকালের দিকে মুলাইদ গ্রামের বেগুনবাড়ি এলাকার ফারুক খানের বহুতল ভবনের নিচ তলার এক কক্ষ থেকে ওই স্বামী-স্ত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত ইসরাফিল মিয়া (১৮) শেরপুরের ঝিনাইগাতি থানার হলদি গ্রামের মফিজুল মিয়ার ছেলে ও রোকেয়া খাতুন (১৭) ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থানার পস্তারী গ্রামের আবুল কাশেমের মেয়ে। তারা দীর্ঘদিন ধরে পরিবারের সাথে শ্রীপুরের মুলাইদ গ্রামের ফারুক হোসেনের বহুতল ভবনে ভাড়া থেকে ইসরাফিল স্থানীয় একটি ওয়ার্কশপে ও রোকেয়া স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ করতেন।
নিহত রোকেয়ার বড় ভাই বোরহান উদ্দিন বলেন, ” প্রেমের সম্পর্ক করে ৭-৮ মাস আগে পরিবারের অমতে বিয়ে করে ইসরাফিল ও রোকেয়া। এরপর থেকে তাদের সম্পর্ক ভালোই ছিল। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোনো কলহ ছিল না। সম্প্রতি ইসরাফিল তার বাবা-মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে ৪ দিন বাড়ি ছিল না। পরে তাদের বুঝিয়ে বাসায় আনা হয়েছিল। গতকাল আর তাদের সাথে আমার কথা হয়নি। আজকে সকালে তাদের মৃত্যুর খবর পেয়ে এখানে আসি।
নিহত ইসরাফিলের বাবা মফিজুল হক জানান, পাশাপাশি ফ্ল্যাটে বসবাস করতেন তারা। পরিবারের রান্নার কাজ তারা ইসরাফিলের ফ্ল্যাটে করতেন। শুক্রবার সকালে ইসরাফিলের ফ্ল্যাটের দরজা খোলা দেখতে পেয়ে ভেতরে যান এবং ইসরাফিলকে ওড়নায় পেঁচানো ঝুলন্ত অবস্থায় এবং রোকেয়ার মরদেহ খাটের ওপর বিছানায় দেখতে পান। পরে পাশ থেকে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে।
শ্রীপুর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান, খবর পেয়ে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে প্রথমে স্ত্রী আত্মহত্যা করে। স্ত্রীর আত্মহত্যার বিষয়টি স্বামী সইতে না পেরে তিনিও আত্মহত্যা করেন। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।