এম এস সজীবঃ ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে বিধ্বস্ত বরগুনার পাথরঘাটা। চারদিকে পানি আর পানি। রেমালের তাণ্ডব থেকে বাঁচলেও মোমের আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়ে প্রাণ গেল আড়াই বছরের তাবাসসুমের। মাছ দিয়ে আর ভাত খাওয়া হলো না তাবাসসুমের।
সোমবার (২৭ মে) রাত সাড়ে ১০টার দিকে পাথরঘাটা উপজেলা চরদুয়ানী ইউনিয়নের সহেরাবাদ গ্রামের আব্দুর রহিমের ভাড়া ঘরে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এ সময় আব্দুর রহিমের আড়াই বছরের মেয়ে তাবাসসুম ঐ আগুনে পুড়ে প্রাণ হারায়। আগুন থেকে বাঁচাতে আসলে বাবাও আহত হন। এমন ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। এমনিতেই ঘূর্ণিঝড় রিমালের ছোবলে পাথরঘাটা কয়েক হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত এবং কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি। এমন অবস্থায় এভাবে মৃত্যু মানতে পারছেন না এলাকাবাসী।
পরে মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুরে আগুনে পুড়ে যাওয়ার ঘর পরিদর্শন করেন বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য এমপি সুলতানা নাদিরার বড় মেয়ে ফারজানা সবুর রুমকি।
জানা যায়, আড়াই বছরের তাবাসসুম মাছ দিয়ে ভাত খাবে এমন আবদার করলে বাবা আব্দুল রহিম ও মা খাদিজা বেগম সোমবার রাতে মেয়েকে ঘুমে রেখে পাশে একটি মোমবাতি জ্বালিয়ে মাছ ধরতে যায় পার্শ্ববর্তী খালে। কিছুক্ষণ পর পার্শ্ববর্তী এক লোক খবর দেয় ঘরে আগুন লেগেছে। দৌড়ে এসে রহিম দেখে মেয়ে পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে৷ আদরের কন্যাকে এভাবে পুড়তে দেখে কোলে নিয়ে ঝাঁপ দেন পুকুরে। কিন্তু তার মেয়েকে আর বাঁচাতে পারেনি। মেয়ের পুড়ে যাওয়া দেহে বাবাও আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান মঞ্জু বলেন, আড়াই বছরের তাবাসসুম মারা যাওয়ার খবরে শোকের ছায়া নেমেছে পুরো এলাকায়।
বাবা আব্দুল রহিম চিকিৎসাধীন বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। বলছেন, ‘বাবায় মোর তাজা মাছ দিয়া ভাত খাইতে চাই ছিলো, এহন কারে খাওয়ামু। মোর বাবায় আর কইবে না মাছের কথা, মজার কথা।
বরগুনা-২ আসেন সংসদ সদস্য এমপি সুলতানা নাদিরার বড় মেয়ে ফারজানা সবুর রুমকি বলেন, এমন মৃত্যু মানা কষ্টকর। তারপরও মেনে নিতে হয়। আমরা এই শোকাহত পরিবারকে সহায়তা দিয়েছি। পাশাপাশি তাদের ঘুরে দাঁড়াতে যাবতীয় দেখাশোনা আমরা করবো।