কুড়িগ্রামঃ কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার কচাকাটা ও চর রাজিবপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়নে ঈদ উপলক্ষে দুস্থদের জন্য বরাদ্দ ভিজিএফ কর্মসূচির বিপুল পরিমাণ সরকারি চাল জব্দ করা হয়েছে। জানা গেছে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার কচাকাটা ইউনিয়নে ঈদুল আযহা উপলক্ষে দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ ভিজিএফ এর ১হাজার ১৬৯ কেজি চাল এক ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিব্বির আহম্মেদ। এর আগে ওই ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে ৬৫টি চাল দেয়ার সুবিধাভোগীর স্লিপও উদ্ধার করা হয়। প্রতিটি স্লিপের বিপরিতে বরাদ্দ রয়েছে ১০ কেজি চাল। পরে চাল ও ¯স্লিপ জব্দ করে কচাকাটা থানা হেফাজতে দেয় সংশ্লিষ্ট ট্যাগ কর্মকর্তা।
পুলিশ জানায়, কচাকাটা ইউনিয়নে ভিজিএফ এর চাল বিতরণ কালে বিক্রির অভিযোগ উঠে। পরে সংশ্লিষ্ট ট্যাগ কর্মকর্তা ও পুলিশের সমন্বয়ে অভিযান পরিচালনা করে ইউনিয়ন পরিষদের পাশে নায়কেরহাট বাজারের শহিদুল ইসলামের বাড়ি থেকে ২০ বস্তা ও মতিনের বাড়ি থেকে ৪ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়। এসব বস্তায় ১হাজার ১৬৯ কেজি চাল পাওয়া যায়। এসময় সহিদুলের বাড়ি থেকে ওই ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডর মেম্বার সাইদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ৫০টি ও চেয়াম্যান স্বাক্ষরিত ১৫টি স্লিপ পাওয়া যায়। এসব স্লিপের বিপরীতে ৬৫০ কেজি চাল বরাদ্দ রয়েছে।
এ বিষয়ে কচাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান শাহাদৎ হোসেনের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
কচাকাটা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিশ্বদেব রায় চাল উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অপরদিকে বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) রাজিবপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন বাজারের পাঁচটি গুদামসদৃশ দোকানঘর থেকে এই চাল জব্দ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তানভীর আহমেদ।
রাজিবপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) লুৎফর রহমান এবং ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আতাউর রহমান মণ্ডল সাংবাদিকদের কাছে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সরকারি সিলযুক্ত পাটের এবং প্লাস্টিকের বস্তায় রাখা প্রায় ২৭৯ বস্তা চাল জব্দ করা হলেও এর পরিমাণ নিশ্চিত করতে পারেননি এই দুই কর্মকর্তা।
বৃহস্পতিবার পরিষদ চত্বরে চাল বিতরণে ট্যাগ অফিসারের দায়িত্বে থাকা উপজেলা দারিদ্র্য বিমোচন অফিসার আবুল হোসেন জানান, পরিষদে চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন না। ট্যাগ অফিসার পরিষদে পৌঁছার আগেই চাল বিতরণ শুরু করে মাসুদ নামে এক যুবক। একটি ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়রা কয়েক বস্তা চাল আটক করেন। খবর পেয়ে ইউএনও ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাজারে অভিযান চালান। এ সময় বাজারের গুদামসদৃশ কয়েকটি দোকানের তালা ভেঙে ভেতর থেকে দুই শতাধিক বস্তা সরকারি চাল জব্দ করা হয়।
বিতরণের জন্য বরাদ্দ করা চাল জব্দের বিষয়ে জানতে মোহনগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যানের নম্বরে ফোন দিয়ে বন্ধ পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে রাজিবপুর উপজেলার ইউএনও তানভীর আহমেদকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ধরেননি।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ সাংবাদিকদেরকে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো। মামলা হবে। যে বা যারাই জড়িত থাক তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।’