বিলালুর রহমান,সিলেট জেলা প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা: শফিকুর রহমান বলেছেন, স্বৈরাচারী সরকার বিরোধী আন্দোলনে শাহাদাতরণকারী ও আহত ছাত্রজনতা জাতীয় বীর। ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের আন্দোলনে ছাত্রজনতার এই ত্যাগ জাতি আজীবন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ রাখবে। ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে মরণ কামড় দিয়েছিল। তারা যে কোন ভাবে ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল। এজন্য তারা ৩ থেকে ৫ আগস্ট সারাদেশে ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ চালায়। ৪ আগস্ট সিলেটের বিভিন্ন স্থানে এমন অনেক ঘটনা ঘটে। যারা গুরুতর আহত হয়েছেন তারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা অসংখ্য। তাদের কারো শরীরের একদিক দিয়ে গুলি ঢুকেছে অন্যদিকে বের হয়েছে। কারো হাত-পা গুঁড়ো হয়ে গেছে। পেট ছিদ্র হয়ে গেছে। এসব দৃশ্য খুবই কষ্টদায়ক। তাদের এই ত্যাগ জাতি চিরদিন মনে রাখবে।
তিনি বলেন, ৫ আগস্ট পর্যন্ত এক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ছাত্র জনতার বিশাল বিজয় অর্জিত হয়েছে। স্বৈরাচারী সরকারের পতন হয়েছে। মানুষ আওয়ামী দুঃশাসন থেকে মুক্তি পেয়েছে। হাসিনা সরকারের পতন পরবর্তী সময়ে একটি স্বার্থান্বেসী মহল দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এ থেকে জাতিকে রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা হানাহানি, ভেদাভেদ চাইনা। আমরা মিলে মিশে দেশটাকে গড়তে চাই। জামায়াত দেশ জাতি ও মানবতার কল্যাণে ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতে থাকবে।
তিনি শনিবার দুপুরে চলমান ছাত্রজনতার আন্দোলনে পুলিশ ও ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের হামলায় আহতদের সিলেটের বিভিন্ন হাসপাতালে দেখতে গিয়ে উপরোক্ত কথা বলেন। তিনি সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ইবনে সিনা হাসাপাতাল ও সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে আহতদের চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন, পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানান এবং দ্রুত সুস্থতা কামনায় দোয়া করেন।
আন্দোলনে সাংবাদিকদের অবদানের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, সিলেটে একজন সাংবাদিক শহীদ হয়েছেন। সাংবাদিকরাও আমাদের অংশ। তারাও এ যুদ্ধে শরীক ছিলেন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করাও তাদের কাজ। আমাদের চেয়ে তাদের দায়িত্ব আরও বেশি। সেই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তারা মারা গেছেন। তাদের ত্যাগ যেন আমরা সারাজীবন মনে রাখি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগরী আমীর মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, জেলা দক্ষিণের সাবেক আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমান, জেলা উত্তরের আমীর হাফিজ আনওয়ার হোসাইন খান, মহানগর নায়েবে আমীর মাওলান সোহেল আহমদ, সেক্রেটারী মোহাম্মদ শাহজাহান আলী, সহকারী সেক্রেটারী এডভোকেট মোহাম্মদ আব্দুর রব ও ড. নুরুল ইসলাম বাবুল, , জেলা উত্তরের নায়েবে আমীর উপাধ্যক্ষ সৈয়দ ফয়জুল্লাহ বাহার, সেক্রেটারী মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, সহ সেক্রেটারী মাঃ ইসলাম উদ্দিন, সদর উপজেলা আমীর নাজির উদ্দিন ও সেক্রেটারী আল ইমরান প্রমূখ।
এদিকে বিকেলে আমীর জামায়াত ডা: শফিকুর রহমান বিগত ছাত্রজনতার আন্দোলনে হবিগঞ্জে পুলিশের গুলীতে নিহত সিলেট সদর উপজেলার মোস্তাক আহমদ ও ঢাকায় নিহত সদর উপজেলার ওয়াসিম আহমদের পরিবারকে সহমর্মিতা প্রদান করেন। এসময় তিনি নিহত দুজনের পরিবারকে নগদ ১ লক্ষ টাকা উপহার দেন।