কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ সন্তানের মুখ দেখে যেতে পারেনি রাজমিস্ত্রি নুর আলম। এই অবস্থায় মঙ্গলবার ( ১৩ আগষ্ট ) তার অন্তঃসত্তা স্ত্রীকে নানা প্রকার খাদ্য সামগ্রী দিলেন কুড়িগ্রাম সদরের ভোগডাঙ্গা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সাইদুর রহমান।
জানা গেছে,কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের ভাগিরভিটা গ্রামের আমির হোসেনের দুই ছেলের মধ্যে নুর আলম বড়। বাবা আমির হোসেন ভ্যানচালক আর মা নুর বানু গার্মেন্টস কর্মী। নুর আলম ছিলেন রাজমিস্ত্রি। সবার ছোট নুর জামাল (১৪) থাকত অন্যের দোকানের কর্মচারী হিসেবে। নুর আলম প্রায় এক বছর আগে বিয়ে করেন। অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী খাদিজা গৃহবধূ আর সবাই কর্মজীবী। সবমিলিয়ে তাদের ছিল সুখের সংসার। পরিবারের সবাই মিলে ভাড়া থাকতেন গাজীপুর চৌরাস্তার তেলিপাড়া এলাকায়।
বাবা আমির হোসেন প্রত্যক্ষদর্শী আশিক ও আব্দুল্লাহর বরাতে জানান, শনিবার (২০ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে ঠিকাদারের সাইডের কাজ থেকে ফেরার পথে চৌরাস্তা এলাকায় গোলাগুলিতে পড়েন। একপর্যায়ে ডান চোখে গুলি লাগলে ঘটনাস্থলে লুটে পড়েন। পরে অন্যরা ধরাধরি করে সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. আবিদ বিল্লাহ তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর তারা লাশ নিয়ে যান জয়দেবপুর সরকারি হাসপাতালে। সেখান থেকে রাত ১০টায় লাশ হস্তান্তর করেন। পরদিন রোববার (২১ জুলাই) গ্রামের বাড়িতে লাশ নিয়ে আসি। সকাল সাড়ে ১০টায় জানাজা শেষে বাড়ির আঙিনায় দাফন করা হয়।
মা নুর বানু বলেন, আমার পোলা রাজনীতি করে না। কাজ করে খায়। আমরা গরিব মানুষ। আমার পোলার কী অপরাধ। তাকে গুলি করে মেরে ফেলল। এর কোনো বিচার নাই। আমি বিচার চাই, ক্ষতিপূরণ চাই। আমার বউমা ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। আমার পোলাটা সন্তানের মুখও দেখে যেতে পারল না। কী হবে ওর স্ত্রী-সন্তানের। সদরের ভোগডাঙ্গা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সাইদুর রহমান জানান, প্রাথমিকভাবে তার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে ওই পরিবারকে বিভিন্ন প্রকার খাদ্য সামগ্রী দেয়া হয়েছে। সরকারিভাবে তার ইউনিয়নে কোন বরাদ্দ আসলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে নিহত রাজমিস্ত্রি নুর আলম এর পরিবারকে সুযোগ-সুবিধা দেয়া হবে।