লিপন খান,কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সারা দেশের ন্যায় কিশোরগঞ্জেও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার মিছিলে হামলা গুলি, আগুনে পুড়িয়ে এক নারীসহ দুজনকে হত্যা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে আওয়ামী লীগ প্রধান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ৮৮ জনের নাম উল্লেখ করে সদর থানায় মামলা হয়েছে। এ মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ২০০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের বত্রিশ এলাকার ব্যবসায়ি ও ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত মতিউর রহমান বাদী হয়ে শুক্রবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. গোলাম মোস্তফা মামলার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
দায়েরকৃত মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, কিশোরগঞ্জ-৬ আসনের সাবেক এমপি ও বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুল কাহার আকন্দ, কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এমপি রেজওয়ান আহমদ তৌফিক, পুলিশের সাবেক আইজি ও কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সাবেক এমপি নূর মোহাম্মদ, কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট সোহরাব উদ্দিন, কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক এমপি মো. আফজাল হোসেনকে হুকুম ও প্ররোচনার আসামি করা হয়।
অন্যান্য উল্লেখযোগ্য আসামিরা হচ্ছেন, প্রধানমন্ত্রী বিশেষ সহকারী কৃষিবিদ মশিউর রহমান হুমায়ুন, আওয়ামী লীগ নেতা শরিফ আহমেদ সাদী, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বকুল, কিশোরগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র মাহমুদ পারভেজ, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আউলাদ হোসেন, সাবেক রাস্ট্রপতির পুত্র রাসেল আহমেদ তুহিন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমন, সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ ওমান খান, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিলকিছ বেগম, জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাচ্চু।
মামলার অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, গত ৪ আগস্ট দুপুর ২ টার দিকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার একটি মিছিল কিশোরগঞ্জ স্টেশন রোড এলাকায় জড়ো হয়।
এসময় প্রথম ৯ আসামির হুকুমে ও প্ররোচনায় অন্যান্য আসামিরা কিশোরগঞ্জ আওয়ামী লীগ অফিস থেকে রামদা, লোহার রড, হকিস্টিক, পেট্রোল বোমা, ককটেলসহ তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় অনেকেই আহত হন।
বাদীসহ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত অবস্থায় পার্শ্ববর্তী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটুর বাসায় আশ্রয় নেন।
এ সময় আসমিরা সেখানে হামলা চালিয়ে ওই বাসায় আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে সেখানে আগুনে পুড়ে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার যশোদল ইউনিয়নের ভাবুন্দিয়া গ্রামের জুলকার হোসাইন ও একই ইউনিয়নের বীর দামপাড়া গ্রামের অঞ্জনা (২৮) নামে দুজনের মৃত্যু হয়।