মোঃ মজিবর রহমান শেখ ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি,, নেচে-গেয়ে উদযাপিত হলো ঐতিহ্যবাহী কারাম উৎসব বিপদ থেকে মুক্তি, অতিবন্যা ও খরা থেকে বাঁচতে দেশ ও মানুষের মঙ্গল কামনায় নেচে-গেয়ে ঐতিহ্যবাহী কারাম পূজা উদযাপন করেছে ঠাকুরগাঁও জেলায় ওরাওঁ সম্প্রদায় । ১৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার রাতে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালান্দর ইউনিয়নের পাঁচ পীরডাঙ্গায় জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপন করা হয় ধর্মীয় উৎসবটি। উৎসবের দিন ওরাওঁ সম্প্রদায়ের মানুষ উপবাস করে কারাম গাছের ডাল কেটে আনেন। সেই ডাল তাদের স্থায়ী পূজামণ্ডপে রেখে পূজা অর্চনা, নাচ-গান ও গল্প বলার মধ্য দিয়ে শুরু হয় উৎসব। কারাম একটি গাছের নাম। ওরাঁও সম্প্রদায়ের মানুষ গাছটিকে পবিত্র এবং মঙ্গলের প্রতীক মনে করেন। এ উৎসবের মাধ্যমে তাদের পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরবে বলে মনে করেন তারা। বাংলা আশ্বিন মাসের শুরুতে এ উৎসবকে ঘিরে ওই এলাকায় বসবাসরত মানুষ নানা আয়োজনে উজ্জীবিত হয়ে ওঠেন। আর বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাল, ডাল ও টাকা তুলে আতিথিয়েতা করা হয় আমন্ত্রিত অতিথি ও আত্মীয়-স্বজনদের। উৎসবটিকে ঘিরে আগে থেকে নানা প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন এ সম্প্রদায়ের মানুষরা। পরিবার আর আত্মীয়স্বজন নিয়ে আনন্দে মেতে ওঠেন সব বয়সী নারী-পুরুষ। জাতীয় আদিবাসী পরিষদের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ইমরান হোসেন চৌধুরী বলেন, প্রতি বছর এ ঐতিহ্যবাহী ও সামাজিক দিবসটি পালন করে এখনকার ওরাওঁ সম্প্রদায়ের আদিবাসীরা। তারা কারাম গাছের ডালকে তাদের রক্ষাকবচ মনে করে। তারা মনে করে গাছটির মাধ্যমে তাদের জীবন রক্ষা হয়। এজন্য প্রতি বছর তারা এ উৎসবটি পালন করে। সারারাত তারা নানা সংস্কৃতি পালনের পর ১৮ সেপ্টেম্বর বুধবার কারাম গাছটি ভাসিয়ে দেবে। কারাম পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি বিশ্বনাথ কেরকেটা বলেন, আদিকাল থেকে আমরা কারাম পূজা করে আসছি। এ কারাম বৃক্ষকে পূজা করার মাধ্যমে আমরা মনে করি আমাদের সব বিপদ-আপদ দূর হয়ে যাবে। এ পূজার মাধ্যমে দেশের মানুষের মঙ্গল হবে। তিনি বলেন, এখানে ২০০৩ সাল থেকে আমরা এ কারাম উৎসবটি পালন করে আসছি। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি এ আয়োজনকে আরও মানসম্মত করতে। কারণ এটি আমাদের বড় একটি ধর্মীয় উৎসব। সরকারি সুযোগ সুবিধা পেলে আমরা ভালোভাবে উৎসবটি পালন করতে পারবো।