মোঃ খলিলুর রহমান,সাতক্ষীরাঃ সাতক্ষীরার শ্যামনগরে দুর্যোগ ঝুঁকি মোকাবেলায় লোকায়ত জ্ঞানের অভিযোজন মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) উপজেলার ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের ধুমঘাট (হাসার চক) গ্রামে পদ্ম কৃষক উন্নয়ন সংগঠন, দিঘির পাড় কৃষক উন্নয়ন সংগঠন, হাসার চক কৃষক উন্নয়ন সংগঠন, সবুজ সংহতি ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক’র যৌথ উদ্যোগে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
মেলায় জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেও নানা সংকট মোকাবেলা করে নিজেদের জীবন জীবিকা রক্ষা ও ফসল উৎপাদনে মেহগনি, নিম, গাঁদা ফুল, তামাক ও হুইল পাউডার দিয়ে জৈব বালাইনাশক তৈরি ও ব্যবহার, ফেরেমোন ফাঁদ ব্যবহার, ভার্মি ও গর্ত কম্পোস্টের তৈরি জৈব সার ব্যবহার, স্থানীয় মাছ সংরক্ষণ, হাজল পদ্ধতিতে ডিম ফুটানো, অচাষকৃত উদ্ভিদ সংরক্ষণ, বীজ সংরক্ষণ, দুর্যোগকালীন শুকনা খাবার সংরক্ষণ, ক্যারেট পদ্ধতিতে ফসল চাষ, বস্তা পদ্ধতিতে ফসল চাষ, বালতি পদ্ধতিতে ফসল চাষ, নষ্ট মাটির ফিল্টারে সবজী চাষ, প্লাস্টিক পুনঃব্যবহারের মাধ্যমে বোতলে সবজি চাষ, মাঁচা পদ্ধতিতে ফসল চাষ, মশাল, পরিবেশ বান্ধব চুলা, লবণ তৈরী, হামান দিস্তা, মেটে, খড়ের ঘর, মাছ ধরার আটল, ঝুড়ি পদ্ধতি শামুক, ঘুটের ছাই, মতিয়ার তামাক, গুল, গোচনা ডোল পদ্ধতি, ভিটা উঁচু করণ, ঢেকি, কাকতাড়–য়াসহ ১৬০ ধরনের লোকায়ত জ্ঞানের প্রয়োগ পদ্ধতি প্রদর্শন করা হয়।
মেলায় স্থানীয় প্রবীণ কৃষক-কৃষাণীরা নতুন প্রজন্মের কাছে তাদের লোকায়ত জ্ঞান চর্চার নানা তথ্য তুলে ধরেন।
মেলার গুরুত্ব তুলে ধরে বক্তারা বলেন, উপকূলে লবণাক্ততা বাড়ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের এমন প্রতিকূল পরিস্থিতিতে টিকে থাকতে লোকায়ত জ্ঞানের গুরুত্ব খুবই বেশি। এসব লোকায়ত জ্ঞান প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম চর্চা হয়ে আসছে। আমাদের কৃষি জমি কমছে। ফসলে পোকার আক্রমণ বাড়ছে। পোকার আক্রমণ ঠেকাতে ও বেশি ফসল উৎপাদনের জন্য অতি মাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে। যা জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু জৈব বালাইনাশক দিয়েও পোকা দমন করা যায়। যা স্থানীয় বা লোকায়ত জ্ঞান। এজন্য ফসল রক্ষা, উৎপাদন বৃদ্ধি ও জনস্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে লোকায়ত জ্ঞান চর্চা বৃদ্ধির বিকল্প নেই।