মোঃ খলিলুর রহমান,সাতক্ষীরা :: সাতক্ষীরার আশাশুনিতে বিএনপির বুধহাটা ইউনিয়ন কমিটির সম্মেলনকে কেন্দ্র দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে বুধহাটা ইউনিয়নের বেউলা সাইক্লোন সেন্টার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছে। বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের জের ধরে পূর্ব নির্ধারিত সম্মেলন পন্ড হয়ে গেছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। জানা যায়,আশাশুনির বুধহাটা ইউনিয়ন বিএনপির ত্রিবার্ষিক সম্মেলন আহবান করে উপজেলা বিএনপির এক গ্রুপের সদস্য সচিব মশিউল হুদা তুহিন গ্রুপ। সম্মেলনে নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের লক্ষ্যে বুধবার বেলা ১০ টায় ইউনিয়নের বেউলা সাইক্লোন শেল্টার মাঠে ভোট গ্রহণ শুরু করা হয়। ভোট গ্রহণের এক পর্যায় বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে বিএনপির আরেক অংশের আহবায়ক আসিফুর রহমান তুহিন পক্ষের শতাধিক নেতা কর্মী সম্মেলন স্থলে গেলে দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এসময় ইটপাটকেল নিক্ষেপ, রড-লাঠি নিয়ে হামলায় উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক পলাশ, যুব দলের সাবেক সহ-সভাপতি বকুল, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শফি, কল্লোল, দিপু, আশিক, শফিকুল ও আছাফুর এবং অপর পক্ষের উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক রবিউল আওয়াল ছোট, যুবদলের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক রমজান, যুবদল কর্মী আজমিনুরসহ কমপক্ষে ৭ জন আহত হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কৃষ্ণা রায়, সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাশেদ হোসাইন দ্রুত অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে উভয় পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেন। এসময় সম্মেলন স্থান থেকে সকলকে সরিয়ে দিয়ে আইন শৃংখলা বাহিনী এলাকা দখলে নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সম্মেলন স্থলে ১৪৪ ধারা জারি করে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর পক্ষে মাইকে ঘোষণা দিয়ে বেউলা সাইক্লোন শেল্টার মাঠ ও এর আশপাশ এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে। সম্মেলন আয়োজনকারীদের মধ্যে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মশিউল হুদা তুহিন ও যুবদলের সদস্য সচিব আবু জাহিদ সোহাগ বলেন, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সকাল ১০ টা থেকে আমরা ভোট গ্রহণ শুরু করেছিলাম। এসময় প্রতিপক্ষ পরিকল্পিত ভাবে রড, লাঠি, ইটপাটকেল নিয়ে হামলা সম্মেলন পন্ড করে দেয়। এসময় কর্মী ও জনগণ ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুললে তারা ফিরতে বাধ্য হয়। এরপর আমরা পুনরায় শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট শুরু করি, অধিকাংশ ভোটার ভোট দিয়েছে। কিন্তু প্রশাসন সারিবদ্ধ লাইনে দাড়িয়ে ভোট দিতে আসা ভোটারদের তাড়িয়ে দিয়ে সম্মেলন পন্ড করা দিয়েছে। উপজেলা বিএনপির আরেক অংশের আহবায়ক আসিফুর রহমান তুহিন, সদস্য সচিব জাকির হোসেন বাচ্চু, যুগ্ম আহবায়ক খায়রুল আহসান বলেন, ১৬ জানুয়ারি খুলনা বিভাগীয় টিমের সিদ্ধান্ত দেন। কিন্তু তারা ১৬ তারিখের আগেই ত্যাগী নেতাদের বাদ রেখে গোপনে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী নিয়ে কমিটি গঠন করে। আজও একই ভাবে সম্মেলন শুরু করা হলে আমাদের নেতাকর্মীরা উপস্থিত হলে তাদের উপর হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত করা হয়। এব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্তদের ও উর্দ্ধতন নেতাদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার কৃষ্ণা রায় বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এলাকায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়ন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।