নয় বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে বগুড়ার শেরপুর উপজেলা আ.লীগের সম্মেলন
মাসুম বিল্লাহ,বগুড়া প্রতিনিধিঃ
নানা জল্পনা-কল্পনার অবশেষে দীর্ঘ ৯ বছর পর বগুড়ার শেরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে উপজেলা আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক মাঠ বেশ চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। আজ ২৮ মার্চ সোমবার শেরপুর টাউনক্লাব পাবলিক লাইব্রেরী মহিলা কলেজ প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হবে ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন।
এ উপলক্ষে সম্মেলনস্থল এলাকা সাজানো হয়েছে নানা ডিজাইনের ব্যানার ও ফেস্টুনে। উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় ও জেলার শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।
এদিকে এ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ঝড় তুলেছেন অনেক প্রার্থীর নেতা ও তাদের সর্থমকরা। কে হচ্ছেন পরবর্তী সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক, তা নিয়ে হোটেল রেস্টুরেন্টে চায়ের কাপেও ঝড় উঠেছে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারী মাস থেকে শেরপুর উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভাসহ মোট ৯৯টি ওয়ার্ড কমিটি গঠন করা হয়েছে। এরমধ্যে পৌরসভা, কুসুম্বী ও শাহবন্দেগী ইউনিয়ন ব্যতিত ১২টি ইউনিটের মধ্যে ৯টি ইউনিটে আ.লীগের কমিটি গঠনের জন্য সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়। তবে এখনো পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠন হয়নি। তাছাড়া এ সম্মেলনে ১৫জন কো-অপ্ট সদস্যসহ মোট ৪৫৪জন কাউন্সিলর তাদের ভোটারিধকার প্রয়োগ করতে পারবে।
এ সম্মেলনকে ঘিরে উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌর কমিটির আ.লীগের নেতৃবৃন্দের মধ্যে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা। হিসাব-নিকাশ চলছে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে। কে হবেন সভাপতি ও সম্পাদক। কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোট নাকি সিলেকশন এনিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে রয়েছেন সম্মেলনের কাউন্সিলররা। সেইসাথে সভাপতি-সম্পাদকের পদ নিয়ে নানামুখী জরিপ করছেন সচেতন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
তবে সম্মেলনে সম্ভাব্য প্রার্থীরা ইতিমধ্যে জেলা এবং কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উচ্চ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ প্রায় শেষ করে ফেলেছে। প্রার্থীদের কেউ আবার পছন্দের পদ বাগিয়ে নিতে নানামুখী লবিং-তদবিরের পথে হাঁটছেন।
ওই উপজেলায় ১০টি ইউনিয়ন রয়েছে। এরমধ্যে দুটি বাদে বাকি ৮টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলন সম্পূর্ণ হয়েছে। সূত্র জানান, বর্তমানে শেরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ওই সম্মেলনকে ঘিরে সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় বেশ কয়েকজন তৎপরতা দেখাচ্ছেন। এরমধ্যে সভাপতির পদে বগুড়া জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য এ্যাডভোকেট গোলাম ফারুক সিনিয়র সহ-সভাপতি জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মুনসী সাইফুল বারী ডাবলু, এবং সাবেক সাধারন সম্পাদক শাহ জামাল সিরাজীর নাম প্রার্থী তালিকায় রয়েছে। তবে বর্তমান কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার তিনি কোন আবেদন বা মনোনয়ন কেনেননি। সেক্ষেত্রে যুক্ত হয়েছে টাউনক্লাব পাবলিক লাইব্রেরী মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ স.ম হাফিজুল ইসলামের নাম। আর এ নামের প্রেক্ষিতে উপজেলা আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে নানা মেরুকরণসহ নানা জল্পনা-কল্পনার শুরু হয়েছে। দেখা দিতে পারে স্থানীয় আওয়ামীলীগের মধ্যে নানাবিধ অন্তর্দ্বন্দ্ব। উপজেলার ওই সম্মেলন ঘিরে সাধারণ সম্পাদকের পদ নিয়েও দলীয় নেতা-কর্মী এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে সবচেয় বেশি কৌতুহল ও আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে। কারণ, এ পদ থেকে বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব আম্বিয়া পদত্যাগ করায় কমিটির ১নং যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদকে ওই পদে ভারপ্রাপ্ত করা হয়। তবে, সাধারণ সম্পাদকের এ পদে ভারপ্রাপ্তকে ভারমুক্ত করা হচ্ছে না নতুন করে কেউ আসছেন কিনা, এনিয়ে ধোয়াসা কাটবে সম্মেলন মঞ্চে। এরমধ্যে পদটি ঘিরে ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক সুলতান মাহমুদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক বদরুল ইসলাম পোদ্দার ববির নাম আলোচনায় রয়েছে।
অন্যদিকে, সন্মেলনকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ঝড় বইতে শুরু করে। কে হচ্ছেন পরবর্তী সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক, তা নিয়ে হোটেল রেস্টুরেন্টে চায়ের কাপে ঝড় উঠেছে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনুর বাসায় (শেরপুর) তার সমর্থন লাভের আশায় প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যায় প্রার্থীরা ভীড় করছেন।
এ প্রসঙ্গে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু বলেন, আমাদের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দুর্নীতি-সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত ব্যাক্তি ও বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকা পরীক্ষিত ব্যক্তিদের দিয়েই শেরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি গঠন করা হবে। সম্মেলনের মধ্যে দিয়ে তারা কমিটিতে আসবেন। অবশ্যই তারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হবেন। দলের এবং সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি হবেন বলে তিনি দাবী করেন।