মোস্তফা কামাল শ্রাবন,চুয়াডাঙ্গাঃ
দর্শনা কেরুজ চিনিকলের আধুনিকায়ন করণের কাজ চলছে বেশ কিছুদিন ধরে। বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টারী বি,এম,এফ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নামে পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান আধুনিকয়তার কাজ করছে। এই প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন মালামাল দীর্ঘদিন ধরে চুরি হচ্ছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে।
অবশেষে পাওয়ারট্রলীতে করে অভিনব কৌশলে রড় চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় ধরা পড়লো চিনিকল প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাকর্মীর হাতে।
সুযোগ বুঝে নিরাপত্তাকর্মীর হাত থেকে ভো-দৌড় দিয়ে পালিয়ে পাওয়ারট্রলি চালক দর্শনা পৌরসভাধীন ঈশ্বরচন্দ্রপুর গ্রামের রহিমের ছেলে হাবিব (২৫)।
এদিকে এ চুরির ঘটনায় অভিযোগের তীর ইনচার্জ নাসির উদ্দিন ও সুপারভাইজার রেজার দিকে।
জানাগেছে, বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টারী বি,এম,এফ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নামে পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠানের তত্বাবধায়নে দর্শনা কেরু এ্যান্ড কোং (বাং) লিমিটেড এর আধুনিকয়তার কাজ চলছে। আর এ কাজের স্থলে প্রায়,প্রায় বিভিন্ন মালামাল চুরি হওয়ার ঘটনা ঘটে থাকে বলে জনশ্রুতি রয়েছে।
তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে কেরুজ ক্যাম্পাসে আধুনিকায়ন কাজে মালামাল বহন কাজে ব্যবহৃত একটি পাওয়ারট্রিলারে পাটাতনের উপর প্লেন সিড দিয়ে অভিনব কায়দায় তৈরী করা বক্সের মধ্য করে প্রায় ১টন রড় লুকিয়ে পাচারকালে কেরুজ নিরাপত্তাকর্মী কলিমুল্লাহর হাতে ধরা পড়ে পাওয়ারট্রলির ভর্তি মালামাল সহ পাওয়ারট্রলি চালক দর্শনা পৌরসভাধীন ঈশ্বরচন্দ্রপুর গ্রামের রহিমের ছেলে হাবিব (২৫)। এসময় নিরাপত্তাকর্মীর কবল থেকে চালক হাবিব কৌশলে ভো-দৌড় দিয়ে পালিয়ে গেলেও চুরিকৃত মালামাল সহ রড ভর্তি পাওয়ারট্রলিটি নেওয়া হয়েছে কেরুজ নিরাপত্তা বিভাগের দখলে। এঘটনায় কেরুজ চিনিকলের পক্ষ থেকে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠণ করা হয়েছে। এ তদন্ত কমিটি আটককৃত মালামালের পাশাপাশি কেরুজ চিনিশিল্প প্রতিষ্ঠানের ইতিপূর্বে চুরি যাওয়া সহ অন্য কোন মালামাল চুরি হয়েছে কিনা তা তদন্ত করবে। এ তদন্ত কমিটির প্রধান কেরুজ কমার্শিয়াল বিভাগের বদরুল আলমের নের্তৃত্বে অন্যরা তদন্ত কার্যক্রম পরিচালিত করে নির্ধারিত সময়ে প্রতিবেদন দাখিল করবে।
সরে জমিনে জানাগেছে, এ প্রতিষ্ঠানের আধুনিকায়ন চলমান কাজ বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টারীর পক্ষে দেখভালে দায়িত্বে থাকা ইনচার্জ নাসির উদ্দিন ও সুপারভাইজার রেজা নামের দু’জন রয়েছে। কেরুজ চিনিকল ক্যাম্পাসে প্রায়,প্রায় বিভিন্ন ধরনের মালামাল চুরির ঘটনার খবর শুনা যায়। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল সকালে কেরুজ ক্যাম্পাসে মিলহাউজ ও বয়লার সহ চিনিকলের আধুনিকায়ন কাজে মালমাল বহন কাজে ব্যবহৃত একটি পাওয়ারট্রিলারের পাটাতনের উপর আরেকটি প্লেট লাগিয়ে তার মাঝ খানে কিছু অংশ ফাঁকা রেখে বেশকিছু রড অভিনব কায়দায় পাচারকালে ধরা পড়ে কেরুজ নিরাপত্তাকর্মীর হাতে।
আর এভাবেই দিনেরপর দিন কেরুজ ক্যাম্পাস এলাকা থেকে ওই পাওয়ারট্রিলারে মালামাল পাচার করা হয়ে থাকে। তবে তাদের ধারনা প্রতিষ্ঠানের আধুনিকায়নে চলমান কাজ বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টারীর পক্ষে দেখভালে ইনচার্জের দায়িত্বে রয়েছে কুষ্টিয়ার জৈনক্য নাসির উদ্দিন ও সুপারভাইজার দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের বড় দুধপাতিলা (দর্শনা হটাৎপাড়া সংলগ্ন) সবুর বাবুর্চির ছেলে রেজার যোগ সাজসে এ সমস্ত চুরির ঘটনা ঘটে। তাদের দাবী চুরি কালে পালিয়ে যাওয়া পাওয়ারট্রলি চালক হাবিব সহ কর্মস্থলের শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করলেই মুখোশ উন্মোচন হবে চুরির সাথে জড়িতদের নাম পরিচয়। নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক কেরুজ চিনিকলের এক কর্মকর্তা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কেরুজ চিনিকলে আধুনিকায়ন কাজের সামগ্রী চুরি হচ্ছে। তবে এ চুরির কাজে কাজ দেখাশুনার দায়িত্বে থাকা ইনচার্জ নাসির ও সুপারভাইজার রেজা জড়িত রয়েছে।
নাসির উদ্দিন বলেন, এবিষয়ে
দর্শনা থানা পুলিশকে মৌখিক ভাবে জানানো হয়েছে। তবে লিখিত কোন অভিযোগ করা হয়নি। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি কারা,কারা এ চুরির সাথে জড়িত রয়েছে।
সুপারভাইজার রেজার নিকট পাওয়ারট্রলি চালকের নাম পরিচয় ও চুরির ঘটনা যানতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তার নাম পরিচয় জানানো যাবেনা। তাকে বাঁচানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
কেরুজ চিনিকলের মহা-ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) শেখ মোঃ সাহাব উদ্দিন বলেন, প্রায়,প্রায় চুরির ঘটনা ঘটে থাকে কেরুজ ক্যাম্পাসে। আজ আমরা হাতে,নাতে মালামাল চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তাকর্মীর মাধ্যমে মালামাল সহ একটি পাওয়ারট্রিলার আটক করেছি।
সেই আটককৃত পাওয়ারট্রিলার চালক পালিয়ে গেলেও তাতে অভিনব কায়দায় পাটাতনের উপরে আরেকটি প্লেট লাগানোর মাঝ খানে রাখা স্থানে অনেক গুলো রড রয়েছে। তবে এবিষয়ে আমরা চিনিকলের পক্ষ থেকে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠণ করেছি। তদন্ত শেষ হলেই চুরির রহস্য উদঘাটন সহ জড়িতদের সনাক্ত করতে পারবো বলে এমটা আশা করছি।