আমিরুল ইসলাম রাশেদ,পেকুয়া,কক্সবাজারঃ কক্সবাজারের পেকুয়ায় বন্যার কারণে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, দেখা দিয়েছে মানবিক বিপর্যয়। উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে অনুমানিক এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। বন্যার পানিতে ডুবে তিনটি শিশু মৃত্যু বরণ করেছেন। ঢলের পানির সাথে ভেসে আসা বিষাক্ত সাপের কামড়ে মৃত্যু বরণ করেছেন একজন ব্যবসায়ী।
নিহত শিশুরা উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের ফেরাসিংগা পাড়া এলাকার নুরুল আলমের শিশু কন্যা জাহেদা বেগম(১০),ছেলে আমির হোছাইন (৫),একই এলাকার ছাবের আহমদের শিশু কন্যা হুমাইরা বেগম(৮), নিহত ব্যবসায়ী নাছির উদ্দীন(৪৫), সদর ইউনিয়নের আন্নর আলী মাতাব্বর পাড়া এলাকার মৃত আলী আহমদের ছেলে ও পেকুয়া বাজারের ক্রোকারিজ ব্যবসায়ী বলে জানা যায়।
এদিকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পনেরো হাজার মানুষকে শুকনো খাবার ও খিচুড়ি খাবার পৌঁছে দেওয়া হলেও,আনাহারে আছেন হাজার হাজার লোক।
ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি হওয়ায়, চাহিদার তুলনাই বরাদ্দ না হওয়ায়, ক্ষতিগ্রস্ত সবাইকে ত্রাণ সহযোগিতা করতে পারছে না বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা।
১৯৯১ সালের প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড়ের পর পেকুয়া ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বন্যার কবলে পড়েছে মনবিক বিপর্যয়, নাই বিদ্যুৎ, নাই পানি, নাই খবার। পানিতে তলিয়ে যায়নি এমন কোন জায়গা নাই। হাট, বাজার,সরকারের প্রশাসনিক দপ্তর, থানা,উপজেলা হাসপাতাল সব জায়গায় পানি আর, পানি এটা মানবিক বিপর্যয় বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট জনেরা।
এই বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান এম জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আপনার অবগত আছেন যে পেকুয়ায় তিন দিন ধরে পানির নিচে শত শত ঘর বাড়ি তলিয়ে গেছে। দেড় লাখ মানুষ পানি বন্দি অনাহারে আছে। সেই রক্ষে আমার উপজেলা পরিষদ কাজ করে যাচ্ছে। গত কাল সারাদিন উপজেলার থেকে এবং আমার ব্যক্তিগত চার হাজার পরিবারকে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছি। বিত্তবান সবাইকে এগিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করছি।
এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার পূর্বিতা চাকমা বলেন, বন্যার কারণে দেড় লক্ষ মানুষ পানিবন্দি হয়েছে, জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ২৫ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে,পনেরো হাজার মানুষকে শুকনো খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে, এছাড়া আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করা লোকদের রান্না করা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। যারা সমাজে বিত্তবান আছেন তাদেরকে অসহায় মানুষের পাশে থাকার আহবান করেছেন।
এই বিষয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় যুগ্মসচিব ( ত্রাণ কর্মসূচি,ত্রাণ প্রশাসন) অঞ্জন চন্দ্র পাল বলেন, “উপজেলা প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যতই চাহিদা পাঠানো হবে, ততই বরাদ্দ দেওয়া হবে,”।