

আরিফুজ্জামান চাকলাদার : ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় জমিজমা নিয়ে সালিশকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই প্রার্থীর অনুসারীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। থানার গোলঘরে বৈঠক শেষে গেটের সামনে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দাউদ গ্রুপ ও যুবদল নেতা শাহীন মোল্লার গ্রুপ। স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের জাটিগ্রামের প্রবাসী রফিক মিয়া ও রজ মিয়ার জমি বিরোধকে কেন্দ্র করে থানায় দুটি অভিযোগ হয়। পরে গত ৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে থানার গোলঘরে সালিশ বসানো হয়। বৈঠকে রফিক মিয়ার পক্ষে উপস্থিত ছিলেন পৌর যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক মনির হোসেন ও পৌর বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক দাউদ হোসেন, যিনি ফরিদপুর-১ আসনের বিএনপি প্রার্থী শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনুর অনুসারী। অন্যদিকে রজ মিয়ার পক্ষে ছিলেন উপজেলা যুবদল আহ্বায়ক শাহীন মোল্লা, সাবেক এমপি খন্দকার নাসিরুল ইসলামের অনুসারী। সালিশ চলাকালে দাউদ ও শাহীন মোল্লার মধ্যে উত্তপ্ত বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে শাহীন মোল্লা মনির ও দাউদকে ‘দালাল’ আখ্যা দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করলে পরিস্থিতি তীব্র হয়ে ওঠে। উপস্থিতরা তাৎক্ষণিকভাবে শান্ত করলেও বৈঠক শেষে থানার গেটের সামনে কামালের চায়ের দোকানে ফের দুই গ্রুপ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ঘটনার বর্ণনায় দাউদ হোসেন বলেন, “সালিশ চলাকালে ভাড়াটে নেতা শাহীন মোল্লা আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। পরে থানার গেটের সামনে দোকান থেকে বাটাম এনে আমার ওপর হামলা চালায়। এতে হাতাহাতি শুরু হয়।” অন্যদিকে শাহীন মোল্লা বলেন, “আমি তো থানায় কোন জমির সালিশিতে যাইনি, ওকে দালাল বলবো কেন। এই গ্যাঞ্জামের সাথে সালিশির কোন সম্পর্ক নাই। আমি থানার সামনে এলে আমার উপর দলবল নিয়ে সন্ত্রাসী হামলা করা হয়েছে। দাউদ আমার দলের কেউ নয়, বহিষ্কৃত নেতা শাহ জাফরের সঙ্গে বিএনএম করা লোক। সে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে।” নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এক বিএনপি নেতা বলেন, জমি নিয়ে সালিশকে কেন্দ্র করে প্রথমে থানার গোলঘরে বাগবিতণ্ডা পরে থানা গেটের সামনে মারামারি হয়।এক পর্যায়ে প্রাণ রক্ষায় থানায় আশ্রয় নিলে পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পরে পুলিশ পাহারায় শাহিনকে বাড়ি পৌচ্ছায় দিয়ে এসেছে। স্থানীয়রা জানান, থানায় কোনো অভিযোগ পড়লেই বিএনপির এই দুই গ্রুপ একেক পক্ষে দাঁড়িয়ে যায়। থানার গোলঘরে সালিশ কিংবা গেটের আশপাশের চায়ের দোকানে মাঝেমধ্যেই তাদের শোরগোল শোনা যায়। এদিকে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যে কোনো মুহূর্তে দুই গ্রুপের বড় সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে বলে ধারণা করছে উপজেলাবাসী। আলফাডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ শাহজালাল আলম বলেন, “দুই পক্ষের মারামারির কথা শুনেছি। তবে গোলঘরের ভেতরে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এখনো কোনো পক্ষ অভিযোগ করেনি।”