বীরগঞ্জে মাহানপুর হাট চান্দিনায় পুলিশ প্রশাসনের সন্ত্রাস বিরোধী জন অবহিত করন সভা অনুষ্ঠিত। মোহাম্মদপুর ইউনিয়নে প্রতিপক্ষের পৃথক হামলায় ২জন আহত, স্বতন্ত্র প্রার্থীর অভিযোগ তাকে কোন প্রচার বা পোস্টার লাগাতে দেওয়া হচ্ছে না।
৯ টি ইউনিয়নে নির্বাচন শুরম্ন হয়েছে, সর্বত্র সুচারম্নভাবে নীতিমালা অনুসারে প্রচার প্রচারণা চললেও ব্যতিক্রম মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন, এখানে নৌকা মার্কার প্রার্থী, সমর্থকদের প্রতিবন্ধকতা সহিংসতার কারনে প্রচারাভিযানে নামতে পারছেন না, এখানকার ‘ঘোড়া’ মার্কার জনপ্রিয়তার শীর্ষে বার বার নির্বাচিত চেয়ারম্যান গোপাল চন্দ্র দেবশর্মা। তিনি উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সমপাদক, গোধুলী বৃদ্ধাশ্রম, নওপাড়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের সভাপতি ছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার।
তাই তাকে ভোটের মাধ্যমে পরাজিত করা সম্ভব নয়, এমন বাসত্মবতায় তার বিজয় ঠেকাতে নৌকার প্রার্থী মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান বাদশা ও তার সমর্থকেরা সহিংসতার পথ বেছে নিয়ে ব্যপক ত্রাস সৃষ্টি করছে, তান্ডব চালিয়ে হুমকি-ধামকি, এমনকি একের পর এক ঘোড়া মার্কার কর্মী সমর্থক ও ভোটারগনের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের উপর হামলা চালিয়ে আহত ও লুটপাট শুরম্ন করেছে। কোথাও তার মার্কা লাগাতে দেয়া হ”েছ না, আবার ঝুলনত্ম মার্কা ছিড়ে ফেলে আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হ”েছ। প্রচারাভিযানের প্রায় এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও ইউনিয়নের কোথাও তার ঘোড়া মার্কার পেষ্টার লাগাতে পারেনি।
অপরদিকে তার পক্ষের লোক অনীল চন্দ্র রায় এবং শহিদুল ইসলামের উপর দফায় দফায় হামলা চালিয়ে গুরম্নতর আহত করা হয়েছে। তারা বীরগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আহত অনীল জানায় রবিবার দিবাগতরাতে সবাই মাথায় হেলমেট পরিহিত ৩০/৪০টি মটর সাইকেলে হামলাকারীরা লাঠিসোটা নিয়ে এসে আমার উপর আক্রমণ চালায়, বলে বেটাকে শেষ কর, যদি নৌকায় ভোট দিস তবে থাকবি অন্যথায় এলাকা ছেড়ে চলে যা, মাথায় আঘাত করলে আমার মাথা ফেটে যায়, সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলি, এখন দেখি আমি হাসপাতালে।
আমার পকেটে থাকা ৩ হাজার ৫শত টাকা তারা নিয়ে গেছে। অনিলের বাড়ি ঐ ইউনিয়নের মন্ডলপাড়া বাবার নাম দিনেশ বলে জানান। তরৎবাড়ি শিবপুর গ্রামের মোঃ তসলিম উদ্দিনের পুত্র আহত মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান সোমবার সকাল সাড়ে ৮-৯ টার সময় সার কেনার জন্য ৪ হাজার ৫শত টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বাজার যায় এমন সময় নৌকা মার্কার প্রার্থী বাদশা’র লোক খেকেরুর ছেলে রশিদুল ইসলাম এসে আমাকে খেকিডাংগা বাজারে যেতে বলে আমি তার সাথে সেখানে পৌছা মাত্রই কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে সাইকেল মেকারের দোকানের পাশে লাঠি দিয়ে হাতে পায়ে এলোপাতাড়ি পিটাতে থাকে ও অশ্লীল ভাষায় গালি দিয়ে বলে বেটা এবার নৌকায় ভোট না দিলে ভিটা ছাড়া করা হবে, নৌকায় ভোট না দিলে এই ইউনিয়নে বসবাসের সুযোগ নেই।
সবাইকে জানিয়ে দিবি ঘোড়া মার্কা বা গোপালের নাম উ”চারন করলে উচিত শিক্ষা দেয়া হবে, আমি মারাত্মক আহত হই, আমার পকেটের টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে। স্বজনেরা আমাকে এখানে এনেছে। নৌকার প্রার্থী ও তার সমর্থকদের তান্ডবে সমগ্র এলাকা ভীত-সন্ত্রস’। ইউনিয়নের জনপদটি থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচনের সুষ্ঠ, স্বাভাবিক পরিবেশ তৈরীর জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী গোপাল চন্দ্র দেবশর্মা রিটার্নিং অফিসার বরাবর প্রার্থী কর্তৃক নির্বাচন আচরন বিধি ভঙ্গ ও ভয়ভীতি ছড়ানোর লিখিত অভিযোগ করেন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে।
ফলে গতকাল রবিবার পুলিশ প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে বিকেলে ৩ টায় মাহানপুর হাটে নির্বাচন আচরণ বিধি বিষয়ক অবহিত করন সভা করেছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপসি’ত থেকে কঠোর হুসিয়ারী উ”চারণ করে বক্তব্য দেন বীরগঞ্জ সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ ওয়ারেস আলী, বিশেষ অতিথি বীরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুল মতিন প্রধান সহ স’ানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং হাজার হাজার ইউনিয়নবাসী উপসি’ত ছিলেন।
উপজেলার শীর্ষ পুলিশ অফিসার দ্বয়সপষ্ট ভাবে উল্লেখ করে বলেন কোন প্রকার সংঘাত, সহিংসতা, বিশৃঙ্খলা, অনিয়ম তথা নির্বাচনী আচরণ বিধি লংঘন বরদাস’ করা করা হবে না, কেউ কাহারো হুমকি ধামকিতে ভয় পাবেন না, আমরা আপনাদের পাশে আছি। সকল প্রার্থীর সমান অধিকার নিশ্চিত করা হবে। সুষ্ঠুভাবে সকল পক্ষ তাদের প্রচারাভিযান চালাতে পারবেন, কোন প্রতিবন্ধকতা চলবে না। পুলিশ ও প্রশাসন সো”চার রয়েছে। নির্ভয়ে নির্বাচন পরিচালনা করুন, কেউ বা কোন গোষ্ঠি বিশৃঙ্খলা করলে বা অনুরূপ চেষ্টা করলে, সাথে সাথে পুলিশে সংবাদ দিন।
এ ব্যপারে স্বতন্ত্র প্রার্থী গোপাল চন্দ্র দেবশর্মা জানান তিনি নিরুপায় হয়ে লিখিত অভিযোগ করতে বাধ্য হয়েছেন, ইতোপূর্বে কখনো এমন পরিস্থিতি দেখেন নি। অভিযুক্ত নৌকা মার্কা প্রার্থীর সাথে তার বাড়িতে গিয়ে এমন কি তার মুঠোফোনে একাধিক বার চেষ্টা করে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।