লিটন পাঠান, হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
হবিগঞ্জের শায়েস্তানগরে বিএনপি প্রতিবাদ সভাকে কেন্দ্র করে দলটির নেতাকর্মীদের সাথে ওর পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় ৬৫ জনের নাম ধরে ি উল্লেখ করে ২ হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে বৃহস্পতিবার (২৩-ডিসেম্বর) রাতে হবিগঞ্জ সদর থানার এসআই নাজমুল ইসলাম বাদি হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় বিএনপির কেন্দ্রীয় সমবায় বিষয়ক সম্পাদক সাবেক মেয়র জিকে গউছকে প্রধান আসামী করা হয়েছে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাসুক আলী।
উক্ত ঘটনায় আটক ১০ জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান। সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে বুধবার মধ্য রাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করা হয়। এদিকে গ্রেফতার আতংকে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। অনেকেই ইতিমধ্যে শহর ছাড়া হয়েছেন। গ্রেফতার আতংকে তারা বাড়িঘর ছেড়েছেন এমন দাবি করেছেন জেলা ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক রুবেল আহমেদ চৌধুরী তিনি বলেন, আমরা মারও খেলাম, এখন পালিয়েও থাকতে হচ্ছে। কেউ ঘরে ঘুমাতে পারছেনা।
পুলিশ নেতাকর্মীদের খোঁজছে অথচ বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার দাবিতে সমাবেশে যোগ দেয়ার জন্য নেতাকর্মীরা যখন জড়ো হচ্ছিলেন তখন শহরের প্রতিটি পয়েন্টে পুলিশ বাধা দেয়। সংঘর্ষ হয়। ছাত্রদল নেতা সাইদুর রহমানের একটি চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ রাজিব আহমেদ রিংগনের অবস্থাও আশংকাজনক।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলি জানান, কাউকে অযথা হয়রাণি করা হচ্ছেনা। কোন নিরপরাধ ব্যক্তি হয়রানির শিকারও হবেনা। তাদের ভয়েরও কোন কারণ নেই। তিনি বলেন, তবে যারা জনগনের জানমালের ক্ষতি করেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাসুক আলী আরও জানান, বুধবারের সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে মোট ১২শ’ রাউন্ড রাবার বুলেট ও ৯০ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। তিনি বলেন, মামলায় জি কে গউছকে প্রধান আসামী করা হয়েছে। এছাড়াও জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. এনামুল হক সেলিমকেও আসামী করা হয়। মামলায় বিভিন্ন উপজেলার নেতাকর্মীদেরও আসামী করা হয়েছে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য করানোর দাবিতে বুধবার হবিগঞ্জে সমাবেশ আহ্বান করে জেলা বিএনপি।
পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী শহরের শায়েস্তানগরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে প্রস্থতিও নেয়া হয়। এতে উপস্থিত হন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক উপদেষ্টা জয়নাল আবেদিন ফারুক, ড. এনাম আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, বিএনপির কেন্দ্রীয় সমবায় বিষয়ক সম্পাদক জি কে গউছ, কেন্দ্রীয় নেত্রী শাম্মি আক্তার, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল আহমেদ শ্যামল।
বেলা ২টায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা। কিন্ত পৌণে ২টার দিকে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেয়ার সময় শায়েস্তানগর পয়েন্টে পুলিশের সাথে তাদের বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে পুলিশসহ উভয়পক্ষের অন্তত ১শ’ জন আহত হয়। প্রায় ১ ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে শায়েস্তানগর থেকে সার্কিট হাউজ রোড পর্যন্ত এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।