এস.এম.বিপু রায়হান
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
একজন স্টেনোগ্রাফার কর্তৃক আইনজীবীকে মারপিটের ঘটনায় পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ এবং চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের বদলির দাবি করলেন আইনজীবীরা।
বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা আইনজীবী সমিতি ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুর রউফ পান্না। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী সমিতির সভাপতি মীর রুহুল আমিন বাবু, অ্যাডভোকেট ছানোয়ার হোসেন, আব্দুল আজিজ সরকারসহ সিনিয়র আইনজীবীরা।
লিখিত বক্তব্যে আব্দুর রউফ পান্না বলেন, গত ১৩ জানুয়ারি ঘুষ না দেওয়ায় বারের সদস্য আবুল কালামকে তার কোর্ট ভবনের চেম্বারে গিয়ে মারপিট করেন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের স্টেনোগ্রাফার ইউসুফ আলী ও তার সঙ্গীরা। এ ঘটনায় ইউসুফসহ দু’জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন ওই আইনজীবী।
ইতোমধ্যে মামলার একজন আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এ বিষয়ে গত ১৬ জানুয়ারি জেলা জজ মহোদয় সমিতির সভাপতি/সাধারণ সম্পদকসহ সিনিয়র আইনজীবীদের ফোন করে তাহার কক্ষে সাক্ষাতের জন্য আমন্ত্রণ জানান।
কিন্তু জেলা জজ মহোদয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের আগেই ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট ও জজ কোর্টের কর্মচারীদের ব্যানারে একদল উগ্রপন্থী কর্মচারীরা আপত্তিকর একটি ব্যানারসহ কোর্ট চত্বরে মিছিল বের করে এবং সকল এজলাসে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
আইনজীবী সমিতি জরুরি সভা আহ্বান করে বারের সদস্যের ওপর হামলাকারী স্টেনোগ্রাফারকে অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানালেও জেলা জজ কোনো পদক্ষেপ নেননি। উপরন্তু স্টেনোগ্রাফার ইউসুফ আলী ওয়ারেন্ট-ভুক্ত আসামি হওয়া সত্বেও নিজে বাদী হয়ে ১১ আইনজীবীকে আসামি করে থানায় মিথ্যা ও সাজানো মামলা দায়ের করেন।
অ্যাডভোকেট আব্দুর রউফ পান্না আরও বলেন, স্টেনোগ্রাফার ইউসুফ আলী একজন মাদকসেবী। তার বিরুদ্ধে ৫/৭টি মামলা রয়েছে। ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামি হয়েও একজন ম্যাজিস্ট্রেটের কক্ষে বসে কীভাবে মামলার রায় লিখে চলেছেন সেটা আমাদের বোধগম্য নয়।
এ সময় অবিলম্বে আইনজীবীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, স্টেনোগ্রাফার ইউসুফকে গ্রেফতার ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অপসারণ দাবি জানানো হয়। দাবি না মানলে কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন আইনজীবীরা। সংবাদ সম্মেলনের আগে আদালত চত্বরে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন আইনজীবীরা।
প্রসঙ্গত, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের স্টেনোগ্রাফার ইউসুফের বিরুদ্ধে বারের সদস্য আবুল কালামকে মারপিটের অভিযোগ এনে রোববার (১৬ জানুয়ারি) থেকে ৫ দিন ধরে আদালত বর্জন কর্মসূচি পালন করছেন আইনজীবীরা। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আইনজীবী ও আদালতের কর্মচারীরা পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ কর্মসূচিও পালন করে। এদিকে ৫ দিন ধরে আদালত বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে বিচার প্রার্থীরা।